সরকারি বিজ্ঞপ্তি দিয়েও বাজারে নিয়ন্ত্রণ আসেনি চিনির দাম। পরিশোধিত খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল কেজিতে ১০৪ টাকা। আর পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল কেজিতে ১০৯ টাকা। দাম নির্ধারণের এক সপ্তাহ পরেও বাজারে দাম কমার প্রভাব পড়েনি। এখনো আগের দাম ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে চিনি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বেশি দামে আগে চিনি ক্রয় করায় এখনো আগের দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। চিনির পাশাপাশি সব পণ্যই বাজারে চলছে ঊর্ধ্বমুখী।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
রোজার তিন সপ্তাহ আগে চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুল্ক প্রত্যাহার করে সরকার। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এক পরিপত্রে চিনির আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৫ শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। কিন্তু এর প্রভাব বাজারে পড়েনি। সে অনুযায়ী গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১০৪ এবং প্যাকেটজাত চিনি ১০৯ টাকা বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যা কার্যকর হওয়ার কথা ছিলো ৮ এপ্রিল থেকে। কিন্তু বাজারে তার বিন্দু পরিমাণ ছোঁয়াও পড়েনি।
বাজার করতে আসা আলমগীর হোসেন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, বাজারে এখনো কমেনি চিনির দাম। আবার কিছু কিছু দোকানে মিলছে না চিনি। সরকার নতুন দাম নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রেতারা তা মানছেন না, তারা সে আগের বেশি দামেই বিক্রি করছেন।
মো. জাকারিয়া নামের এক ক্রেতা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “প্যাকেটের গায়ে লেখা ১১২ টাকা। কিন্তু সরকার এক সপ্তাহ আগে কমিয়েছে চিনির দাম, বাজারে তার কোনো প্রভাব নেই। এটা হলো দেশের ব্যবসায়ীদের ডাকাতি কারবার। ২০-৩০ টাকা দাম বাড়ায়া তিন টাকা কমাইলো। এটা মানুষের সঙ্গে এক ধরনের প্রহসন।”
কারওয়ান বাজারের নোয়াখালী জেনারেল স্টোরের মালিক প্যাকেট চিনির কেজি বিক্রি করছেন ১১৫ টাকা, খোলা ১১২ টাকা। আর মৌলভীবাজার থেকে ৫০ কেজির বস্তা কেনা পড়ে ৫ হাজার ৫৫০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজি ১১০ টাকা। সরকারের নির্ধারিত দরে কেন পণ্য বিক্রি করছেন না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নতুন দরের পণ্য এখনো বাজারে আসেনি।”
কারওয়ান বাজারের মুদি ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান টিটু সংবাদ প্রকাশকে বলেন, পাইকারি বাজার থেকে তাদের আগের দামে চিনি সংগ্রহ করতে হয়েছে। ভোক্তারা দাম কমানোর বিষয়টি বললেও তাদের কিছু করার নেই। তারা বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করছেন। কবে নাগাদ দাম কমবে সেই বিষয়টি জানা নেই তাদের।
এদিকে বছরের অন্য যেকেনো মাসের তুলনায় রমজানে সারাদেশে আড়াই থেকে তিন লাখ টনের মতো বাড়তি চিনির চাহিদা তৈরি হয়। এই সময় শরবত ও জিলাপিসহ বিভিন্ন ইফতারি উপকরণ তৈরিতে চিনির বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানিতে শুল্ক সুবিধা দেওয়া হলেও বাজারে তার প্রভাব পড়ছে না।
আপনার মতামত লিখুন :