• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন না হলে বিএনপিও শান্তিতে থাকতে পারবে না: ১৪ দল


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৯, ২০২২, ০৬:৪৩ পিএম
নির্বাচন না হলে বিএনপিও শান্তিতে থাকতে পারবে না: ১৪ দল

নির্বাচন না হলে বিএনপিও এ দেশে শান্তিতে থাকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন ১৪ দলের নেতাকর্মীরা। তারা বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, “আগামী নির্বাচন হতে দেবেন না বলেন, নির্বাচন না হলে কাদের হাতে ক্ষমতা চলে যাবে, তা বুঝতে হবে। তখন আপনারাও (বিএনপি) শান্তিতে থাকতে পারবেন না। বিএনপি-জামায়াত অপশক্তিকে এ দেশে থেকে বিতাড়িত করা হবে।”

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহান বিজয় ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা। আলোচনা সভার আয়োজন করে কেন্দ্রীয় ১৪ দল।

দলের নেতাকর্মীরা বলেন, “আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতাবিরোধীরা আবারও মাঠে নেমেছে। তারা শেখ হাসিনার সরকারকে পতন করে দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।”

এদেরকে এ দেশ থেকে বিতাড়িত করতে ১৪ দল ও আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীcj ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তারা।

প্রধান অতিথির বক্তব্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, “বিএনপি হলো ষড়যন্ত্রকারী। বিজয়ের মাসে ষড়যন্ত্র করলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।”

’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করে আরেকটা পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা বলে দাবি করেন তিনি।

আমু বলেন, “এরাই এখন বিজয় মাসকে বিতর্কিত করার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দফা দিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি সংবিধান পরিবর্তন করার জন্য কমিটি গঠন করেছে। তাদের উদ্দেশ্য কখনো সফল হবে না।”

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, “যারা স্বাধীনতাবিরোধী তাদের রাজনীতি করার অনুমতি আমরা দিতে পারি না। বিজয়ের মাসে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে বিশৃঙ্খলা করার পাঁয়তারা করার চেষ্টা করছে। আবার ডিসেম্বর মাসে তারা ১০ দফা দাবি দিয়েছে। বিএনপি হলো ভুয়া তাদের দিয়ে কোনো কাজ হবে না। কোনো ষড়যন্ত্র করলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।”

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, “পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মূল্য নষ্ট করার চক্রান্ত করছে। বিশ্বের বুকে যখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটা মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং ২০৪১ সালের উন্নত দেশে গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন, তখনি বিএনপি-জামায়াত আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করছে।”

’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে বিদেশি শক্তি জড়িত ছিল, সেই একই অপশক্তি বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে এখন ষড়যন্ত্র করছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, “এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের বিতাড়িত করতে হবে।”

জাতীয় পার্টির (জেপি)  সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, “যারা বলেছেন নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। এ দেশে নির্বাচন না হলে আপনারা (বিএনপি)  শান্তিতে থাকতে পারবেন না। কারণ, কাদের হাতে ক্ষমতা চলে যাবে, সেটা বুঝতে হবে।”

আগামী দিনে নতুন বিজয় ছিনিয়ে আনার জন্য সব নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সব শক্তি যদি ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশের মাটি কোনো ষড়যন্ত্র করতে পারবে না। তারা যদি দেশের মধ্যে থেকে কোনো ষড়যন্ত্র করে তাহলে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে। দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা করতে স্বাধীনতাবিরোধীদের মাঠে নেমেছে বিএনপি।”

আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে করার আহ্বান জানান তিনি।

জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার বলেন, “এ দেশে সব মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় কিন্তু বিএনপি-জামায়াত তা বাধাগ্রস্ত করছে। এক যুগ ধরে বাংলাদেশ যে সংবিধানের আলোয় এগিয়ে যাচ্ছে, তা ধ্বংস করে অসাংবিধানিক উপায় ক্ষমতা আসতে চায় বিএনপি। বাংলাদেশে কেনো পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা জায়গা হবে না। ১৪ দলের সব নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিএনপি-জামায়াতকে পরাজিত করতে হবে। তাদের সঙ্গে কোনো আপস হবে না।”

সাম্যবাদীর দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, “বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে রাজনীতি করেননি তিনি অর্থনৈতিক অধিকার নিয়ে রাজনীতি করেছেন। শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা দেশের নেতৃত্বে না থাকলে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। তাই আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।”

তরিকত ফেডারেশন চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি বলেন, বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন স্বাধীনতা আর তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা দিয়েছেন সোনার বাংলা। সোনার বাংলা গড়ে তোলার কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ দুই ভাগে বিভক্ত। একটা পক্ষ হলো স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি আরেকটা হলে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি। বিএনপি-জামায়াতকে অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে আর ছাড় দেওয়া হবে না। আগামী নির্বাচন হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রক্ষার করার নির্বাচন।”

গণতন্ত্র পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, “যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তারাই এখন আবার দেশের মধ্যে ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশের মানুষ মাথা নত করতে জানে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করবে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।”

গণ আজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকাদা বলেন, “পাকিস্তানিরা তাদের পরাজিত যেনে ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা এখনো ষড়যন্ত্র করতে চায়, এই বিরোধী শক্তিকে আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। সবাই মিলে তাদের প্রতিহত করতে হবে।”

ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপির নেতৃত্বে মাঠে নেমেছেন। বিএনপির যতবার ষড়যন্ত্র করতে মাঠে নামবে ততবার তারা পরাজিত হবে।”

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা, দেশের উন্নয়নকে নিয়ে যখনি ষড়যন্ত্র শুরু করে পরাজিত শক্তিরা তখনি ১৪ দল নেতাকর্মীরা বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে।”

এসব দেশবিরোধী শত্রুদের জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে প্রতিহত করারও আহ্বান জানান তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি বলেন, “রাজাকার ও আলবদরদের নির্বাচনের আগে প্রতিহত করতে হবে। আওয়ামী লীগ কাউকে ভয় পায় না, নিজের গতিতে চলে। আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিহত করতে প্রস্তুত আছে।”

আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।

Link copied!