সারা দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৯ আগস্ট) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত দুইটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। অপসারিত মেয়রদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসও।
তবে শেখ তাপসের কোনো সন্ধান মিলছে না। তিনি কি দেশেই কোথাও গা ঢাকা দিয়েছেন, নাকি বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেননি কেউই। তবে গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যত্থানের পর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়ে পালিয়ে গেছেন ভারতে।
সেই দিনের পর থেকে আওয়ামী সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, নেতাকর্মীদের মতো প্রভাবশালী মেয়র তাপসেরও খোঁজ মিলছে না। তবে অনেকে বলছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের আগে থেকেই অনেক মন্ত্রী-এমপি গা ঢাকা দিয়েছিলেন। যাদের মধ্যে কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও বেশিরভাগই আছেন আত্মগোপনে। কেউ কেউ উড়াল দিয়েছেন দেশের বাইরে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কোথায় আছেন মেয়র তাপস? এই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দুইদিন আগে ৩ আগস্ট ভোরে অনেকটা গোপনে দেশ ছাড়েন তাপস।
তাপসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ
সরকার পতনের পর তাপসের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠছে। গত ১৭ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বিডিআর বিদ্রোহে নিহত মেজর শাকিলের ছেলে রাকিন আহমেদ দাবি করেন, ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ডে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ফজলে নুর তাপস ও শেখ সেলিম সরাসরি জড়িত। এছাড়াও নেপথ্যে আরও রয়েছে।’
২০২৩ সালের ১৩ মে দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি রম্য রচনায় মানহানি হয়েছে দাবি করে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন মেয়র তাপস। পত্রিকাটির সম্পাদক মাহফুজ আনামসহ তিনজনকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন। সেই ঘটনার পর ব্যাপক সমালোচিত হন ব্যারিস্টার তাপস। সামাজিক মাধ্যমে তাকে ১০০ কোটি টাকা দামের মেয়র সম্বোধন করা হতো।
২০২৩ সালের শুরুর দিকে সড়কের গাছ কেটে নেতিবাচক আলোচনায় আসেন ব্যারিস্টার তাপস। ২০২০ সালের ৩০ জুলাই বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে তাপস বলেছিলেন, ‘ঢাকাবাসীর অভিপ্রায় অনুযায়ী বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।’
সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিভিন্ন প্রাণী অধিকার সংস্থা এবং পশুপ্রেমীরা। কুকুর অপসারণ না করার দাবিতে চিত্রাঙ্কন, মানববন্ধনসহ বেশ কিছু কর্মসূচিও পালিত হয়। পরের বছর ২০২১ সালে ব্যারিস্টার তাপস মেয়র থাকার যোগ্য নয় বলে দাবি করেন সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন।
এছাড়া ২০২৩ সালের মে মাসে একজন প্রধান বিচারপতিকে নামিয়ে দিয়েছিলেন বলে যে মন্তব্য করেছিলেন তার সেই বক্তব্য গড়ায় আদালত পর্যন্ত। তাপস বলেছিলে, “মনটা চায় আবার ইস্তফা দিয়ে ফিরে আসি। যেখানে মুগুর দেয়ার সেটাও জানি। একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম।”
ব্যারিস্টার তাপস আরও বলেছিলেন, “মশিউজ্জামানকে (বারের গত নির্বাচনের সাব কমিটির প্রধান) আমরা মনে করতাম, ওরে বাবা, কী জানি ফেরেস্তা আসছে। সবচেয়ে বড় চোর হলো মশিউজ্জামান। যে সকল সুশীলরা আমাদের বুদ্ধি দিতে যাবেন সেই সকল সুশীলদের আমরা বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ছেড়ে দেবো।”



































