• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৫ জ্বিলকদ, ১৪৪৪

সন্তানের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কী করবেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৫, ১০:৪৮ পিএম
সন্তানের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কী করবেন
ছবি: সংগৃহীত

আত্মবিশ্বাস একটি শিশুর মানসিক বিকাশের মূল ভিত্তি। যা শিশুকে জীবনের প্রতিটি ধাপে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। আত্মবিশ্বাসী শিশু নতুন কিছু শিখতে আগ্রহী হয়, সমস্যা সমাধানে নিজেকে এগিয়ে রাখে, সামাজিকভাবে আরও সক্রিয় হয় এবং ব্যর্থতা বা সমালোচনাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে। শিশুর আত্মবিশ্বাস জন্মগত নয়। এটি গড়ে ওঠে পারিবারিক পরিবেশ, অভিজ্ঞতা এবং অভিভাবকের ভূমিকার ওপর নির্ভর করে। তাই শিশুর আত্মবিশ্বাস গড়তে সচেতনভাবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

ইতিবাচক উৎসাহ দিন
শিশু কোনো কাজ করলে তাকে ছোট করে না দেখে উৎসাহ দিন। "তুমি চেষ্টা করেছো, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ" এই ধরনের বাক্য শিশুর মনে সাহস জোগায়। ছোট ছোট সফলতার প্রশংসা করলে শিশুর মনে আত্মবিশ্বাস জন্মায়। প্রশংসা অবশ্যই হতে হবে আন্তরিক এবং বাস্তবসম্মত।

দায়িত্ব দিন ও সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করুন
শিশুকে বয়স অনুযায়ী ছোট ছোট দায়িত্ব দিন। নিজের জামা কাপড় গুছানো, খেলার জিনিস ঠিকঠাক রাখা। এ ধরনের দায়িত্ব শিশুকে নিজের ওপর আস্থা রাখতে শেখায়। একইভাবে কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিন। কোন জামাটা পরবে, কোন খেলাটা খেলবে। এতে সে বুঝবে তার মতামত গুরুত্ব পায়।

ভুলকে শেখার অংশ হিসেবে দেখান

শিশু যখন ভুল করে, তাকে বকা না দিয়ে বলুন, “ভুল করা দোষের কিছু না, বরং ভুল থেকে শেখাটাই আসল।” ভুল করার পর কীভাবে ঠিক করা যায়, সেটা শেখালে তার শেখার আগ্রহ বাড়বে এবং ব্যর্থতা নিয়ে ভয় কমবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি আত্মবিশ্বাস তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তুলনা করা থেকে বিরত থাকুন

অনেক অভিভাবকই অন্যের সঙ্গে তুলনা করে নিজের শিশুকে বলেন“দেখো, ও কত ভালো করছে, তুমি পারছো না কেন?” এই ধরনের তুলনা শিশুর মনে হীনমন্যতা সৃষ্টি করে এবং আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। প্রত্যেক শিশু আলাদা, তাই তার অগ্রগতিকেও ব্যক্তিগতভাবে মূল্যায়ন করুন।

ভালোবাসা ও স্নেহ প্রকাশ করুন

শিশু যখন বুঝতে পারে সে নিঃশর্ত ভালোবাসা পাচ্ছে, তখন তার আত্মমর্যাদা বাড়ে। নিয়মিত তাকে জড়িয়ে ধরা, হাসিমুখে কথা বলা, সময় দেওয়া এসব আচরণ শিশুর মনকে প্রশান্ত রাখে এবং সে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে শেখে।

শিশুকে শুনুন ও গুরুত্ব দিন

শিশু যা বলছে মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তার প্রশ্ন, মতামত বা আবেগকে গুরুত্ব দিন। এতে সে বুঝবে তার মতামতের মূল্য আছে। শিশুকে অবজ্ঞা করলে সে নিজের মূল্যবোধ হারাতে শুরু করে, যা আত্মবিশ্বাসের জন্য ক্ষতিকর।

প্রশিক্ষণের সুযোগ দিন

শিশু যদি কোনো বিষয়ে দুর্বল হয়, তবে সেটা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য না করে তাকে ধৈর্যসহ শেখান। পড়ালেখায় একটু পিছিয়ে থাকলে বাড়িতে ধীরে ধীরে অনুশীলনের ব্যবস্থা করুন। শিশুর উন্নতি দেখলে তাকে উৎসাহ দিন। এতে সে বুঝবে কঠোর পরিশ্রমে সাফল্য আসে।

সামাজিক দক্ষতা গড়তে সহায়তা করুন

বন্ধু তৈরি, অন্যদের সঙ্গে মিশে চলা, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ইত্যাদি সামাজিক আচরণ শেখাতে হবে। পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার মনোভাব শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। তাকে বিভিন্ন সামাজিক পরিস্থিতিতে অংশ নিতে দিন।

শিশুর আগ্রহকে সম্মান করুন

প্রত্যেক শিশুর কিছু না কিছু আগ্রহ বা প্রতিভা থাকে। কেউ ছবি আঁকতে ভালোবাসে, কেউ গান গাইতে। তার যেকোনো আগ্রহকে উৎসাহিত করুন। নিজেকে প্রিয় কাজে দক্ষ মনে হলে শিশুর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।

আপনি নিজে মডেল হোন

শিশুরা যা দেখে, তাই শেখে। আপনি যদি নিজের কাজ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করেন, নিজের ভুলকে স্বীকার করেন এবং তা থেকে শেখেন, তাহলে শিশুও তাই শিখবে। নিজের কথায় এবং কাজে শিশুর সামনে দৃঢ়তা ও ইতিবাচকতা দেখান।

Link copied!