ঈদুল আযজা মানেই পশু কোরবানি। পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। তাই ঈদের কয়েকদিন আগ থেকেই শুরু হয় পশুর বেচাকেনা। সারাদেশে কোরবানির পশুর হাট বসেছে। বিক্রেতারা গরু নিয়ে হাজির হয়েছেন সেই হাটে। আর ক্রেতারাও পশু কিনতে ভিড় করছেন হাটগুলোতে।
বতর্মান সময় লাইভ ওয়েটের মাধ্যমে পশু বেচাকেনা বেড়েছে। দেশের গরুর খামারগুলোতে পশুর বেচাকেনা হয় লাইভ ওয়েট অনুযায়ী। সেই অনুযায়ীই নির্ধারণ হয় দাম। এতে পশুর ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় দাবী বিক্রেতাদের। তাই এখন অনেক কোরবানির হাটেও পশুর ওজন মাপার জন্য ডিজিটাল স্কেল বসানো থাকে। ওজন দরে পশু বেচাকেনা করে।
কিন্তু লাইভ ওয়েটের মাধ্যমে কোরবানির পশুর বেচাকেনা করা জায়েজ হবে কিনা তা কি জানেন? বিশেষজ্ঞরা জানান, পশুর লাইভ ওয়েট দেখে পশুর মূল্যমান কিংবা এর মাংসের পরিমাণ অনুমান করা যায়। কিন্তু এটি নিশ্চিত হওয়া যায় না। তাই পশুর লাইভ ওয়েট অনুযায়ী মাংস বিক্রি করা হয়, তা জায়েজ হবে না। কোনো পশুর লাইভ ওয়েট হলো একশত পঞ্চাশ কেজি হলে এর থেকে চল্লিশ শতাংশ বর্জ্য হিসেবে বাদ দিয়ে নব্বই কেজি গোশত পাঁচশত টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হলে তা মোটেও জায়েজ হবে না।
অন্যদিকে লাইভ ওয়েট যদি শুধুমাত্র কোরবানির পশুর মূল্যমান অনুমান করার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং সেই অনুযায়ী যা দাম আসে তা দেখে ক্রেতা-বিক্রেতার সম্মতিতে মূল্য নির্ধারণ করা হয়, তবে তা জায়েজ হবে। ক্রেতা কোনো পশু পছন্দ হলে কেজিপ্রতি কত টাকা দরে বিক্রি হবে তা নির্ধারণ হলো এবং এরপর লাইভ ওয়েট দেখার পর ক্রেতা-বিক্রেতার সম্মতিতে দাম নির্ধারণ করা হলো, তবে সেই পশু কেনা জায়েজ হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, ওজন হিসেবে গরু বা ছাগলটির মাংস বেচাকেনা করা যাবে না। বরং এর মূল্য অনুমান করার জন্য গরুটি ওজন করা হয়েছে। ক্রেতা পশুটি দেখে বিক্রেতার দেওয়া দামে কিনতে সম্মতি দিয়েছেন। এটি জায়েজ হবে।
তাছাড়া লাইভ ওয়েটে কোরবানির পশু কেনার সময় যোগ্য পশু কিনতে হবে। যেমন ছয় ধরনের গবাদি পশু দিয়ে কোরবানি করা যায়। উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। কোরবানি পশুর নির্দিষ্ট বয়সসীমা হতে হবে। ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এ তিন পশু একজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা যায়। উট, গরু ও মহিষ এ তিন পশু কোরবানিতে সর্বোচ্চ সাত জন শরিক হতে পারে। সাত জন ওই পশু কেনায় সমান শরিক হবে। সমানভাবে গোশতও ভাগ করে নেবে।