কোরবানি মাংস সংরক্ষণের জন্য কেমন ফ্রিজ কিনবেন

ঈদুল আজহা মানেই পশু কোরবানি। ঈদের দিন পশু কোরবানি নিয়েই ব্যস্ত সময় পার হয়। এরপর শুরু হয় মাংস সংরক্ষণের কাজ। ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ করে দীর্ঘদিন খাওয়া হয়। তাই ভালো ফ্রিজ এই সময় অত্যন্ত জরুরি। অনেকেই পুরোনো ফ্রিজে জায়গার অভাবে ভোগেন। আবার কেউ কেউ নতুন ফ্রিজ কেনার কথা ভাবেন। তবে মাংস সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ কেমন হওয়া উচিত তার সঠিক ধারণা থাকে না। ফ্রিজ শুধু বড় হলেই হবে না, মাংস ঠিকভাবে সংরক্ষণের উপযোগী ফিচার ও ক্ষমতা থাকতে হবে।

কোরবানির মাংস অনেকদিন সংরক্ষণ করতে হয়। এটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে যদি ঠিকমতো তাপমাত্রা বজায় না রাখা হয় বা জায়গার অভাব হয়। তাইবফ্রিজে থাকতে হবে পর্যাপ্ত ফ্রিজিং স্পেস থাকা জরুরি। ফ্রিজ দ্রুত ঠান্ডা হওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। শক্তিশালী কনডেনসিং ও কম্প্রেসর হতে হবে। সেই সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন কুলিং সিস্টেমের ব্যবস্থা থাকাও জরুরি।

কোন ধরণের ফ্রিজ উপযুক্ত

ডাবল ডোর রেফ্রিজারেটর

এই ধরনের ফ্রিজে ফ্রিজিং এবং কুলিং সেকশন আলাদা থাকে। সাধারণত ওপরের অংশ ফ্রিজার এবং নিচের অংশ রেফ্রিজারেটর। এতে ফ্রিজিং স্পেস বেশি থাকে। মাংস আলাদা সেগমেন্টে সংরক্ষণ করা যায়। 

ডিপ ফ্রিজ

কোরবানির সময় সবচেয়ে কার্যকর একটি অপশন ডিপ ফ্রিজ। প্রচুর মাংস দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়।

বিশাল সংরক্ষণ ক্ষমতা (২০০–৫০০ লিটার পর্যন্ত) থাকে। টেম্পারেচার দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখতে পারে। কম বিদ্যুৎ খরচ হয়।

সাইড বাই সাইড ফ্রিজ

যারা আধুনিক ও বড় পরিবারে থাকেন, তাদের জন্য একসঙ্গে অনেক খাবার ও মাংস সংরক্ষণে এটি উপযোগী। ফ্রিজ ও ফ্রিজার উভয়ের বিশাল জায়গা থাকে। স্মার্ট টেম্পারেচার কন্ট্রোল ব্যবস্থা৷ রয়েছে। ডিজাইন ও ফিচার আধুনিক হয়।

ফ্রিজের সাইজ কেমন হবে

সঠিক ধারণক্ষমতা নির্ধারণে পরিবারের সদস্য সংখ্যা ও কোরবানির পরিমাণ বিবেচনা করা উচিত।পরিবার অনুযায়ী ফ্রিজ ধারণক্ষমতা ২–৩ জন ২০০–২৫০ লিটার, ৪–৬ জন ৩০০–৪০০ লিটার, ৭ জন বা তার বেশি ৪৫০ লিটার বা বেশি।

কী কী ফিচার থাকতে হবে

ফ্রোস্ট ফ্রি সিস্টেম

মাংস বারবার খোলার সময় জমে থাকা বরফ যেন নিজে থেকেই গলে যায়, এমন ফিচার খুব প্রয়োজনীয়।

ফাস্ট ফ্রিজিং মুড

মাংস রাখার পর দ্রুত ঠান্ডা হওয়ার জন্য এই ফিচার দরকার, যাতে ব্যাকটেরিয়া না জন্মায়।

মাল্টি এয়ার ফ্লো সিস্টেম

এই ফিচার থাকলে সমানভাবে ঠান্ডা বাতাস ছড়িয়ে দেয় পুরো ফ্রিজে। এতে ফ্রিজের একেক অংশে মাংস রেখে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে।

ইনভার্টার টেকনোলজি

বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে ও ফ্রিজের কম্প্রেসর দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে।

রিমুভাল ট্রে এন্ড বক্সেস

ফ্রিজে ট্রে বা বক্স সহজে খুলে বড় প্যাকেটের মাংস রাখার ব্যবস্থা থাকলে সুবিধা হয়।

এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গ্যাসকেট

ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধক গ্যাসকেট থাকলে মাংস দীর্ঘদিন তাজা থাকে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী

কোরবানির সময় ফ্রিজে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, তাই বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়। তাই ৩–৫ স্টার রেটিং বা ইনভার্টার ফ্রিজ বেছে নিন, যা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করবে।

যা করতে হবে

নতুন ফ্রিজ কিনলে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা চালিয়ে তারপর মাংস রাখুন। মাংসগুলো ছোট ছোট ব্যাগে ভাগ করে রাখুন। একই ব্যাগ বারবার খুলবেন না— এতে দ্রুত নষ্ট হয়। নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্কার করুন।

ডিপ ফ্রিজের নিচে পুরাতন মাংস আগে বের করে ব্যবহার করুন।

মনে রাখবেন, ভালো ফ্রিজ একবার কিনলে তা বহু বছর ব্যবহারযোগ্য হয়।