বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে গেঞ্জি শব্দটি খুবই পরিচিত এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত। গরমকালে শরীরের প্রধান পোশাককে ঘামে ভেজা থেকে রক্ষা করতে এই পোশাকটি পরার চল কিন্তু খুব বেশি দিন আগে শুরু হয়নি। অনেকে মনে করেন, ব্রিটিশ আমলেই ভারতবর্ষে এই হাতাকাটা বিশেষ পোশাক পরার চল শুরু হয়।
এর আগে স্লিভলেস শার্ট নিয়ে দুটি কথা বলে নেওয়া যাক। এটি মূলত পশ্চিম থেকেই পরবর্তীকালে প্রাচ্যে এসেছে। এ ধরনের পোশাকগুলোর শৈলী সাধারণত লিঙ্গের ওপর নির্ভর করে। এ ধরনের পোশাক আন্ডারশার্ট বা অন্তর্বাস হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। আবার ক্রীড়াবিদেরা ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড এবং ট্রায়থলনের মতো খেলায় পরে থাকেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় এই পোশাক সাধারণত ট্যাংক টপ এবং ওয়াইফ বিটার (বউ পেটানো লোক), গিনি টি বা ডাগো টি নামে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রে ইতালীয় বংশোদ্ভূত জাতিগোষ্ঠীকে ‘গিনি’ ও ‘ডাগো’ বলে তাচ্ছিল্য করা হতো। বিশেষ করে বিশ শতকের ত্রিশ ও চল্লিশের দশকের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী শ্রমিকেরা সাধারণত এ ধরনের পোশাক পরতেন বলেই এমন নাম। আর এখান থেকেই মার্কিনদের ধারণা জন্মেছিল যে, এই পোশাক শুধু অভিবাসী এবং বিশেষ করে ইতালিয়ান-আমেরিকানরাই শুধু পরে। আর চিরাচরিত ধারণা হলো, শ্রমিক শ্রেণি বিশেষ করে যারা নির্দিষ্ট একটা জাতিগোষ্ঠী থেকে এসেছে, তারা সাধারণত সহিংস হয়। সারা দিন খেটেখুটে ঘরে এসে বউ পেটায়। এখান থেকেই আমেরিকানরা তাদের পোশাকের নাম দিয়েছে ওয়াইফ বিটার।
গেঞ্জি শব্দের উৎস ইংরেজি guernsey বা gansey। ইংল্যান্ডের গুয়েরেন্সি দ্বীপপুঞ্জে জেলেরা নরম ও আরামদায়ক এক ধরনের পোশাক পরতেন। বৃষ্টি ও নোনা জলের ছাঁট থেকে বাঁচতে সহায়ক এই পোশাকের নাম ওই দ্বীপপুঞ্জের নামানুসারে প্রচলিত হয়। ব্রিটিশ নৌসেনারাও এই পোশাক ব্যবহার করতেন।
ব্রিটিশদের মাধ্যমেই ভারতবর্ষে এই ঔপনিবেশিক এই পোশাকের আগমন ঘটেছে বলে ধারণা করা যায়। সেই সূত্রে ঢুকে গেছে বাংলা ভাষার শব্দসম্ভারে।