• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

তুরস্কে ভূমিকম্প: দ্রুতই শুরু হবে পুনর্নির্মাণ কাজ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩, ০৯:২২ এএম
তুরস্কে ভূমিকম্প: দ্রুতই শুরু হবে পুনর্নির্মাণ কাজ

গত সপ্তাহের শক্তিশালী ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো ভেঙে ফেলে দ্রুতই বড় ধরনের পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তুরস্ক সরকার।

তুরস্কের দক্ষিণের হতাই প্রদেশের প্রায় অর্ধেক ভবন হয় ভূমিকম্পে ধসে গেছে অথবা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সেগুলো আর বসবাসের উপযোগী নেই। তুরস্ক সরকার ক্ষতিগ্রস্ত ওই ভবনগুলো দ্রুত ভেঙে ফেলে পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা বলেছে।

দেশটির পরিবেশ ও নগরায়নমন্ত্রী মুরাত কুরুম এক টুইটে বলেন, “যেসব ভবন ভাঙা প্রয়োজন আমরা দ্রুতই সেগুলো ভেঙে ফেলে নিরাপদ বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করব।”

গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোররাতে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গাজিয়ানতেপের কাছে হওয়া ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বহু শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভূমিকম্পে উভয় দেশে মৃতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। যারা বেঁচে আছেন, তাদের তীব্র ঠান্ডার মধ্যে গৃহহীন অবস্থায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান জানান, তার দেশে মৃতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৪১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ৮১৪ বলে সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থার ও জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার প্রতিবেদনগুলোর বরাতে জানানো হয়েছে।

এদিন তুরস্কে একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে একজন নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ২২২ ঘণ্টা তিনি ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে ছিলেন।

তবে উদ্ধারকাজ গুটিয়ে আসছে। বিভিন্ন দেশ থেকে যেসব উদ্ধারকর্মীরা তুরস্কে গিয়েছিলেন, তারা নিজ নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন।

তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকেও নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে, যদি কর্তৃপক্ষ তাদের বাড়িকে নিরাপদ বলে ঘোষণা করে তবে।

তুরস্কের চেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায়। দীর্ঘ ১১ বছরের গৃহযুদ্ধে দেশটি আগেই ধ্বংস হয়েছিল। এখন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে ভূমিকম্প।

গৃহযুদ্ধে দেশটি দুই ভাগে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সিরিয়ার বেশির ভাগ অংশ প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বাহিনীর দখলে থাকলেও একটি অংশ এখনো বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে।

ফলে আন্তর্জাতিক মহলকে সেখানে ত্রাণ পাঠাতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে হচ্ছে।

প্রাথমিকভাবে তুরস্কের সঙ্গে একটিমাত্র সীমান্ত দিয়ে সিরিয়ায় ত্রাণ যাচ্ছিল। কিন্তু ত্রাণ কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না অভিযোগ তুলে কয়েক দিন ধরে জাতিসংঘ সেখানে ত্রাণ পাঠানো বন্ধ রেখেছে।

বাস্তুহারা হয়ে আলেপ্পো থেকে ইদলিবে আশ্রয় নেওয়া আব্দুল রহমান মুহাম্মদ রয়টার্সকে বলেন, “এখানকার পরিস্থিতি সত্যিই দুঃখজনক।”

রয়টার্স জানায়, ভূমিকম্পের আট দিন পর মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ত্রাণ প্রবেশে দ্বিতীয় আরেকটি সীমান্ত খোলার অনুমতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আসাদ।

সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করছে দাতব্য সংস্থা হোয়াইট হেলমেট।

সেখানকার প্রধান রাইদ সালেহ বলেন, “আমাদের সঙ্গে কী ঘটছে...বিশ্বে এই প্রথম এমনটা হচ্ছে। কোথাও ভয়ংকর ভূমিকম্প হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘ সেখানে কোনো ধরনের সহায়তা পাঠাচ্ছে না।”

রাইদ সালেহ আরও বলেন, “আমরা হাত দিয়ে একের পর এক পাথর সরিয়ে সেগুলো নিচে কিছুই পাচ্ছি না। অথচ কংক্রিটের নিচে চাপা পড়া লোকজন আমাদের বের করুন! আমাদের বের করুন! বলে চিৎকার করছে। কিন্তু আমরা সেখান থেকে খালি হাতে ফিরছি। এ ক্ষেত্রে শুধু আপনার হাতই যথেষ্ট নয়।”

Link copied!