• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠক, ৫ প্রিসাইডিং অফিসার গ্রেপ্তার


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৭, ২০২৪, ০৮:৩৪ এএম
প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠক, ৫ প্রিসাইডিং অফিসার গ্রেপ্তার
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সংবাদ সম্মেলন। ছবি : আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় প্রিসাইডিং অফিসারদের নিয়ে এক প্রার্থী গোপন বৈঠক করায় ৫ প্রিসাইডিং অফিসারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। 

সোমবার (৬ মে) রাত ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ও পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান মণ্ডল।

এর আগে,  রাতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন।

গ্রেপ্তার প্রিসাইডিং অফিসাররা হলেন যমুনা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, এসবি রেলওয়ে কলোনি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক মো. আবু সামা, বাহুকা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক বাচ্চু কুমার ঘোষ, জনতা ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ইয়াসিন আরাফাত ও জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুর ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, রোববার রাত ৮টার দিকে খবর আসে, কতিপয় প্রিসাইডিং অফিসার একজন প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠক করছেন। খবরটি জানানো সঙ্গে সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ এবং রিটার্নিং অফিসার অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু তাদের ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। তারা কোনোভাবে খবর পেয়ে দ্রুত সরে যান। পরে রিটার্নিং অফিসার এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ দেন। এরপর পুলিশ সুপার প্রযুক্তি ব্যবহার করে জড়িতদের প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করে ৫ প্রিসাইডিং অফিসারসহ ঘটনার মূলহোতা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান মণ্ডল বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করি। পরে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৫ জন প্রিসাইডিং অফিসারসহ ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড’ আমিনুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (৭ মে) তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে।”

এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে ১০ জন প্রিসাইডিং অফিসার জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের পরিবর্তন করে নতুন প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দিয়েছি। পাশাপাশি আমরা প্রার্থীকে শোকজ করেছি। তিনি শোকজের জবাব দিয়েছেন। পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, রোববার (৫ মে) রাতে সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বনবাড়িয়া কাদাই পার্কে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে গোপনে বৈঠকের অভিযোগ ওঠে। বৈঠকের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে জেলা–উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা হাজির হলে রিয়াজ উদ্দিন ও তার লোকজন সটকে পড়েন। এ ঘটনায় রিয়াজ উদ্দিনকে শোকজ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

আগামী ৮ মে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন এস এম নাসিম রেজা নুর (মোটরসাইকেল), তিনি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান; মো. নুরুল ইসলাম সজল (কাপ-পিরিচ), তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক; মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন (আনারস), তিনি সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি; রাশেদ ইউসুফ জুয়েল (দোয়াত কলম), তিনি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক  ও প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ভাতিজা এবং এস এম আহসান হাবিব (ঘোড়া), তিনি জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।

Link copied!