যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আবারও অভিযোগ আনা হয়েছে। এবার তার বিরুদ্ধে নিজ অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডার মিয়ামি ফেডারেল আদালতে ‘ফেডারেল অপরাধের’ মামলা করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নানা নথির অপব্যবহার করেছেন বলে বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গঠন করা হয়।
শুক্রবার (৯ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নানা নথি নিজের কাছে রাখা এবং সেগুলো অপব্যবহারের কারণে তাকে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া আরও সাতটি অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। মামলাটিতে মোট সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ন্যায়বিচারকে বাধা দেওয়ার ষড়যন্ত্র এবং মিথ্যা বিবৃতি দেওয়া উল্লেখযোগ্য।
গত বছর ট্রাম্পের ফ্লোরিডার ‘মার-এ-লাগো’ বাসভবনে তল্লাশি চালিয়ে ১১ হাজার নথি জব্দ করা হয়। যার মধ্যে ১০০টি গোপনীয় তথ্য বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে কিছু ছিল অতি গোপনীয় নথি।
এ মামলা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের যে ইচ্ছা তাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। কারণ, তিনি এই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে কারাদণ্ড হতে পারে। আর ফেডারেল অপরাধে কারাদণ্ড হলে তাকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য বলেও ঘোষণা করা হতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতি জানিয়েছেন, মিয়ামির একটি ফেডারেল আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাকে তলব করা হয়েছিল। এ সময় তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।
তিনি লিখেছেন, আমি কখনোই ভাবিনি যে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এমনটা ঘটতে পারে। এটি সত্যিই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি অন্ধকার দিন। দেশ হিসেবে আমরা গুরুতরভাবে এবং দ্রুত পতনের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু একসঙ্গে আমরা আমেরিকাকে আবারও মহান করব (মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন)!
এদিকে সরকারি নথি ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন বা ধ্বংস করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন কি না, তা নিয়ে আইনি বিশেষজ্ঞরা দ্বিমত পোষণ করেছেন।
তবে ফেডারেল আইন অনুসারে, জাতীয় প্রতিরক্ষা গোপন করে গুপ্তচরবৃত্তি আইন লঙ্ঘন করলে ১০ বছর পর্যন্ত এবং বিচারে বাধা দিলে ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। তবে ট্রাম্পের সর্বোচ্চ শাস্তির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা কম।
এর আগে এপ্রিলে নির্বাচনী তহবিল অপব্যবহারের জন্য নিউইয়র্কের একটি আদালতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। কয়েক মাসের মধ্যে এটি তার দ্বিতীয় অভিযোগ। ওই ঘটনার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো সাবেক কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফৌজদারি অভিযোগের সম্মুখীন হন। এ ছাড়া এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আর কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কখনোই ফেডারেল অপরাধের অভিযোগে মামলা হয়নি।
বিবিসির বিশেষ সংবাদদাতা ক্যাটিকে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আগের আইনি পদক্ষেপগুলো ভোটারদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারেনি। এপ্রিলের সর্বশেষ অভিযোগটি তার ভোটের সংখ্যার ক্ষেত্রে একটি সুচ সরানোর মতোই ছিল। কিন্তু তার চলমান আইনি ঝামেলাগুলো শেষ পর্যন্ত তাকে ডুবিয়ে দিতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :