• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

সুদানে সংঘর্ষ অব্যাহত, নিহত বেড়ে ১৮৫


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৩, ০৯:৩৫ এএম
সুদানে সংঘর্ষ অব্যাহত, নিহত বেড়ে ১৮৫

সুদানে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে এবং লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৮০০ মানুষ। গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে সুদানের বহু হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং চিকিৎসাসেবা ও খাবারের সরবরাহ কমে গেছে।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর তথ্য জানিয়েছে। সুদানজুড়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র দলের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ এখনো অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনী ও র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে একটি আধা সামরিক গোষ্ঠীর মধ্যে এ সহিংসতা চলছে। দুই বাহিনীর মধ্যকার এই সংঘর্ষে বিমান হামলা, আর্টিলারি এবং ভারী গোলাগুলির ব্যবহারও দেখা যাচ্ছে।

সুদানে জাতিসংঘের মিশনের প্রধান ভলকার পার্থেস রুদ্ধদ্বার অধিবেশনে নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮৫ জন নিহত এবং আরও ১৮০০ জন আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি খুবই অস্পষ্ট। তাই লড়াইয়ের ফলে ক্ষমতার ভারসাম্য কোথায় স্থানান্তরিত হচ্ছে তা বলা খুব কঠিন।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘস্থায়ীভাবে অস্থিতিশীল বলে পরিচিত সুদানের রাজধানীতে এই লড়াই নজিরবিহীন এবং এমনকি এটি বেশ দীর্ঘায়িতও হতে পারে। যদিও আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিকভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে কূটনীতিকরা সক্রিয় হতে শুরু করেছেন।

এর আগে সোমবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সুদানের যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে ‘অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করার’ আহ্বান জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন, লড়াইয়ের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেলে তা ‘দেশ ও অঞ্চলের জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে।’

সুদানিজ ডক্টরস ইউনিয়ন বলেছে, লড়াইয়ের কারণে খার্তুম এবং অন্যান্য শহরের একাধিক হাসপাতাল ‘ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। এর মধ্যে কিছু শহরের চিকিৎসা সেবা সম্পূর্ণ ‘পরিষেবার বাইরে’ রয়েছে।

খার্তুমের বাসিন্দা খুলুদ খায়ের বলেন, “এখানকার বাসিন্দারা কোথাও নিরাপদ না। বেসামরিক নাগরিকদের আপাতত ঘরে অবস্থান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখানেও নিরাপদ না তারা।”

যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, আরব লিগসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এই সংঘাত বন্ধে উভয় পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে। দ্বন্দ্ব নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে মিসর ও দক্ষিণ সুদান।

২০২১ সালে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এর পর থেকে সেনাবাহিনীর জেনারেলরা ‘স্বাধীন কাউন্সিলের’ নামে দেশ চালাচ্ছিলেন। এই স্বাধীন কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হলেন জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। অপর দিকে স্বাধীন কাউন্সিলের প্রধান হলেন জেনারেল আব্দেল ফাতাহ আল-বুরহান।

বেসামরিক সরকার গঠনের অংশ হিসেবে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়েই সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। সেনাবাহিনী বলছে, আরএসএফকে দুই বছরের মধ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করা হবে। কিন্তু আরএসএফ বলছে এই একীভূতকরণের প্রক্রিয়া যেন অন্তত ১০ বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফকে একীভূত করলে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব কে দেবে এ নিয়েও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।

Link copied!