পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহত: বিক্ষোভে উত্তাল প্যারিস, গ্রেপ্তার ১৫০

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মঙ্গলবার ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশে গাড়ি থামাতে ব্যর্থ হওয়া ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ। এ ঘটনার প্রতিবাদের উত্তাল হয়ে উঠেছে ফ্রান্স। মঙ্গলবার রাত থেকে চলমান বিক্ষোভে গেপ্তার হয়েছেন অন্তত ১৫০ জন আন্দোলনকারী। এর আগে পেনশন সংস্কারের বিক্ষোভে টালমাটাল হয়েছিল ইউরোপের এই দেশটি।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা প্যারিস শহরের বিভিন্ন ভবনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। দেশটির কর্মকর্তাদের শান্ত হওয়ার আহ্বান সত্ত্বেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন শহরে।

বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিনে ফ্রান্সের টাউন হলসহ দেশজুড়ে বিদ্যালয় ও থানাগুলোর সামনে ‘চরম সহিংসতার’ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন। তিনি বলেন, বুধবার রাত এবং বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে পুলিশ ১৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ বলছে, কিশোরের নাম নাহেল এম। তাকে গাড়ি থামানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সে তা অমান্য করায় গুলি করতে তারা বাধ্য হয়েছে। নাহেলের এই হত্যাকে ‘অমার্জনীয় অপরাধ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়্যেল ম্যাক্রোঁ।

রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে দেশটির ট্রাফিক পুলিশের গুলিতে নিহতের বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ অথবা আরব।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুলিশ অফিসার একটি গাড়ির চালকের দিকে বন্দুক তাক করে আছেন। এরপরই একটি গুলির শব্দ শোনা যায়। গাড়িটি কিছুদূর গিয়ে ধাক্কা খেয়ে থামে। জরুরি বিভাগের লোকজন তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও গুলিবিদ্ধ কিশোর তৎক্ষণাৎ মারা যায়।

বার্তাসংস্থা এএফপি কর্তৃক যাচাইকৃত ফুটেজে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। একজন তার অস্ত্রটি জানালা দিয়ে ড্রাইভারের দিকে তাক করে এবং চালক গাড়ি চালানোর চেষ্টা করলে পুলিশকে গুলি করতে দেখা যায়। ঘটনার পর পরই উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যুবকটিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সে মারা যায়।

গাড়িতে কিশোরসহ আরও দুজন ছিলেন। একজন পালিয়ে যান এবং অপরজনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার ঘটনার পর ওই এলাকায় বেশ কয়েক দফা বিক্ষোভ হয়েছে। গাড়ি, ময়লার বিন ও কাঠের গুঁড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

নিহতের একজন আইনজীবী স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন, যা ঘটেছে তা কিছুতেই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না। এ মৃত্যুকে একটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।