• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

ইলেকট্রনিক ব্রেন ইমপ্ল্যান্টে সুস্থ হবেন পক্ষাঘাতগ্রস্তরা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৩, ১২:২৭ পিএম
ইলেকট্রনিক ব্রেন ইমপ্ল্যান্টে সুস্থ হবেন পক্ষাঘাতগ্রস্তরা

ইলেকট্রনিক ব্রেন ইমপ্ল্যান্টের মাধ্যমে একজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত (প্যারালাইজড) ব্যক্তি এটি সম্পর্কে চিন্তা করে সহজেই হাঁটতে ও উঠে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছেন। প্রথমবারের মতো ‘মেডিকেল ইলেকট্রনিক ব্রেন ইমপ্ল্যান্টের’ পর ওই ব্যক্তি বলেছেন, তার জীবন বদলে গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ৪০ বছর বয়সী ডাচ ব্যক্তি গের্ট-জান ওস্কাম ১২ বছর আগে একটি সাইকেল দুর্ঘটনায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছিলেন।

তবে ব্রেন ইমপ্ল্যান্টের মাধ্যমে তার চিন্তাভাবনা ও অনুভূতির সাহায্যে তিনি স্বাভাবিক হাঁটা চলা করতে পারছেন। যদিও এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে কিন্তু যুক্তরাজ্যের একটি নেতৃস্থানীয় মেরুদণ্ডী দাতব্য সংস্থা এটিকে ‘খুবই উত্সাহজনক’ বলে অভিহিত করেছে।

ওস্কাম বিবিসিকে বলেন, “আমি একটি শিশুর মতো অনুভব করছি, আবার হাঁটতে শিখছি। এটি একটি দীর্ঘ যাত্রা যদিও এখন আমি দাঁড়াতে পারি এবং আমার বন্ধুর সঙ্গে বিয়ার খেতে পারি। এটি একটি আনন্দের বিষয় যা অনেকেই বুঝতে পারেন না।”

নেচার জার্নালে প্রকাশিত এই ইলেকট্রনিক ব্রেন ইমপ্ল্যান্টের নেতৃত্বে ছিলেন সুইস গবেষকরা। নিউরোসার্জন ও লুসান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জোসেলিন ব্লোচ ব্রেন ইমপ্ল্যান্টের জন্য সূক্ষ্ম অস্ত্রোপচার করেছিলেন।

তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এ চিকিৎসা পদ্ধতিটি এখনো একটি মৌলিক গবেষণা পর্যায়ে রয়েছে। পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীদের জন্য অনেক বেশি মাত্রায় উপযোগী করতে কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে।

অধ্যাপক জোসেলিন ব্লোচ বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটিকে ল্যাব থেকে বের করে ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়াই ছিল মেডিকেল টিমটির লক্ষ্য। আমাদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধুমাত্র একটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করা নয়। মেরুদণ্ডে আঘাতে আক্রান্ত আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে সুস্থ করে তোলা। যারা ডাক্তারদের কাছ থেকে নিয়মিত শুনে আসছেন যে, এর সঙ্গে অভ্যস্ত হতে হবে। তারা আর কখনো নড়াচড়া করতে পারবেন না।

যুক্তরাজ্যের দাতব্য সংস্থা স্পাইনাল রিসার্চের প্রধান নির্বাহী হার্ভে সিহোতা বলেছেন, যদিও এই প্রযুক্তিটি ব্যবহার উপযোগী করতে আরও অনেক দূর যেতে হবে। তবে তিনি এটি ‘খুবই উত্সাহজনক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

২০২১ সালের জুলাই মাসে গের্ট-জান ওস্কামের অপারেশন করা হয়েছিল। অধ্যাপক জোসেলিন ব্লোচ তার মাথার খুলির উভয় পাশে ৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের দুটি বৃত্তাকার গর্ত করেছিলেন। এরপরে তিনি দুটি ডিস্ক-আকৃতির ইমপ্ল্যান্ট প্রবেশ করান। যা বেতার তরঙ্গের আকারে মস্তিষ্কের সংকেত প্রেরণ করে। গের্ট-জানের মাথায় দুটি সেন্সর যুক্ত একটি হেলমেট থাকে। সুইস গবেষক দল একটি অ্যালগরিদম তৈরি করেছে যা এই সংকেতগুলোকে গের্ট-জানের মেরুদণ্ডের চারপাশে ঢোকানো দ্বিতীয় ইমপ্ল্যান্টের মাধ্যমে স্নায়ুর মধ্যে গিয়ে পা এবং পায়ের পেশীগুলো সরানোর কাজ করবে।

গবেষকরা দেখেছেন যে, কয়েক সপ্তাহের প্রশিক্ষণের পরে তিনি একজন ব্যক্তির সাহায্যে দাঁড়াতে এবং হাঁটতে পারছেন।

গবেষণার নেতৃত্বদানকারী লুসানের ইকোলে পলিটেকনিক ফেডারেলের (ইপিএফএল) অধ্যাপক গ্রেগোয়ার কোর্টিনের মতে, তার চলাচল ধীর কিন্তু মসৃণ। তাকে এত স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে দেখে খুব ভালো লাগছে। এটি একটি দৃষ্টান্ত যা যুগোপযোগী পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।

Link copied!