• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মুহররম ১৪৪৫

এক যুগ পর ভারত যাচ্ছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৩, ০২:০৭ পিএম
এক যুগ পর ভারত যাচ্ছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) নামে একটি আঞ্চলিক জোটের বৈঠকে অংশ নিতে ২০১১ সালের পর প্রথম কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফরে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (৪ মে) ভারতের গোয়ায় পৌঁছাবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২০১১ সালের জুলাইয়ে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার দিল্লিতে এসএম কৃষ্ণার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। কিন্তু তখনকার পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। সে সময় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল খুবই সীমিত আকারে। দুই দেশ তখন বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টায় মনোযোগী ছিল। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও পাকিস্তানের সম্পর্ক ছিল সংকটপূর্ণ।

আমেরিকান থিংকট্যাঙ্ক দ্য উইলসন সেন্টারের মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, “সে সময় কূটনৈতিক সম্প্রীতি বাড়ানোর চেষ্টায় ছিল দেশ দুটি। তবে আজ এটি একটি ভিন্ন গল্প।”

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও স্মৃতিচারণা করে বলেন, “১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর দেশ দুটি কাশ্মীর নিয়ে একাধিক যুদ্ধ করেছে। ২০১৯ সালে কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাদের ওপর জঙ্গি হামলার পর ভারত পাকিস্তানের ভূখণ্ডে হামলা করে। হামলার পর, দুই দেশ পারমাণবিক যুদ্ধের খুব কাছে চলে গিয়েছিল।”

বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (৪ ও ৫ মে) ভারতের গোয়াতে এসসিওভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠকে বসবেন। সেখানে ভারত ও পাকিস্তান ছাড়াও চীন, রাশিয়া এবং মধ্য এশিয়ার আরও চারটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা থাকছেন।

পাকিস্তানে নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার রাঘবন বলেছেন, “সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনকে (এসসিও) ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।”

আঞ্চলিক জোটের বৈঠকে যোগ দিলেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন না বিলাওয়াল।

দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যাপিমন জ্যাকব বলেছেন, “একজন পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীও দীর্ঘদিন ভারত সফরে আসেননি। যার কারণে এই সফরটিও বৃহত্তর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুব বেশ গুরুত্ব বহন করে না।”

মাইকেল কুগেলম্যান আরও বলেছেন, “পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরকে দ্বিপাক্ষিক নয়, বহুপাক্ষিক হিসেবে দেখাই ভালো। তিনি দিল্লির সঙ্গে সমঝোতা করতে যাচ্ছেন না। তিনি আঞ্চলিক সংস্থার একটি সম্মেলনে অংশ নিতে যাচ্ছেন, যা পাকিস্তানের স্বার্থের জন্য যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে।”

এদিকে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারির এই সফরটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রধারী চির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন কারণে একে অপরের বিষয়ে নাক গলিয়েছে।

এ ছাড়া পাকিস্তান ইতোমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সফরকালে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন না।

ভারতের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে নিজের অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।

সেখানে তিনি বলেছেন, “ভারতের গোয়ায় যাচ্ছি আজ। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন সিএফএম বৈঠকে পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেব। এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আমার সিদ্ধান্ত এসসিওর সনদের প্রতি পাকিস্তানের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।”

তিনি আরও বলেন, “আমার এই সফরের সময় আমি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।”

Link copied!