উপজাতিদের মর্যাদা নিয়ে ভারতের একটি আদালতের আদেশের প্রতিবাদে আন্দোলন করছে মণিপুর রাজ্যের আটটি জেলার উপজাতি গোষ্ঠীগুলো। এই আন্দোলন ব্যাপক সহিংস আকার ধারণ করেছে। গত চারদিনে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ জনে পৌঁছেছে। মণিপুরে দাঙ্গা প্রশমনে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে। সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন শনিবার রাজধানী ইম্ফলের পরিস্থিতি খানিকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও রাজধানীর আশপাশ ও দূরবর্তী এলাকাগুলোতে এখনও সংঘাত চলছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, যে ৫৪ জন নিহত হয়েছেন, তাদের ১৫ জনের মরদেহ পূর্ব ইম্ফলের জওহরলাল নেহেরু ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সাইন্সেস হাসপাতালের মর্গে এবং ১৬ জনের মৃতদেহ চারুচন্দ্রপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বাকি ২৩ জনের মরদেহ রাখা হয়েছে পশ্চিম ইম্ফলের রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস হাসপাতালের মর্গে।
এর বাইরে রাজ্যের বিভিন্ন পার্বত্য অঞ্চলে সশস্ত্র পাহাড়ি গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাত চলছে সেনাবাহিনী ও পুলিশের। গত চার দিনে এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৫ জন সশস্ত্র যোদ্ধা নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন দুই জন সেনাসদস্য।
বৃহস্পতিবার মণিপুরে দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর ওইদিন রাতেই ভারতীয় সংবিধানের ৩৫৫ ধারার আওতায় উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যটিতে বেশ কয়েক কোম্পানি রিজার্ভ সেনা পাঠায়।
৩৫৫ ধারার প্রয়োগ অনেকটা জরুরি অবস্থা জারির মতো। তবে ভারতের গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই ধারার প্রয়োগ খুবই বিরল।
মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করতে বলে। বুধবার হাইকোর্ট এই সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরপরই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলো বিক্ষোভ শুরু করে, আর সেই থেকেই সূত্রপাত এই জাতিগত দাঙ্গার।
মণিপুরের সহিংসতার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কর্ণাটকে তার নির্বাচনী প্রচার বাতিল করে সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনীর অপর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, গত তিন দিনে সংঘাতপূর্ণ বিভিন্ন এলাকা থেকে মোট ১৩ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে আর্মি ক্যাম্পেও আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :