• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৩, ১১:০১ এএম
রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি রাজ্যে রামনবমী উপলক্ষে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এ মিছিলকে কেন্দ্র করে কলকাতা আর হাওড়ায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। লোকজন ও বাড়িঘর লক্ষ করে হামলার অভিযোগ করেছেন অনেকে। এছাড়া মহারাষ্ট্রেও হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ভারতজুড়ে রামচন্দ্রের জন্ম উৎসব ‘রামনবমী’ পালিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। আর এতে কলকাতা আর হাওড়ার কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে। এদিকে সংঘর্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অপ্রীতিকর পরিস্থিতির আশঙ্কায় পশ্চিমবঙ্গের শিল্প শহর আসানসোলের একটি স্কুলের বেশিরভাগ ছাত্রীই বৃহস্পতিবার স্কুলে আসেনি।

ওই স্কুলের একজন শিক্ষিকা পরিচয় প্রকাশ না করে বিবিসিকে বলেন, “ওদের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম যে আজ রামনবমী, বাইকে করে অস্ত্র হাতে মিছিল বের হবে, যদি কোনো অশান্তি হয়, সেই ভয়ে বাবা-মা স্কুলে পাঠায়নি। আর সকাল থেকেই যেভাবে স্কুলের পাশে ডিজে বাজছে, তাতে মনের মধ্যে একটা ভয় তো কাজ করছেই।”

দেশটির বার্তাসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, হাওড়া শহরের কাজীপাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রামনবমীর মিছিল ঘিরে বড় সংঘাতের সৃষ্টি হয়। বেশ কিছু দোকান ও গাড়িতে পাথর নিক্ষেপ এবং আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যারা আজকে দাঙ্গা করেছে, যতই মামলা করুক আর হামলা করুক, কোনো অজুহাত আমি শুনব না। আমি পরিষ্কার বলছি, আজকের ঘটনায় যারা দায়ী, যারা বাইরের লোক এলাকায় ঢুকতে দিয়েছে, আমি তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেব।”

এদিকে মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গাবাদের শম্ভাজিনগরে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা দিয়ে রামনবমীর মিছিল যাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। রামনবমীর মিছিল ঘিরে বুধবার রাত থেকেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে।

বৃহস্পতিবার গান বাজিয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় উত্তেজনা ছড়ায়। কিরাদপুরা এলাকায় দুই দল যুবকের মধ্যে প্রথমে মারপিট শুরু হয়। কিছুক্ষণ স্লোগান চলে এবং তারপর পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটে। বহু গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টা সহিংসতা চলার পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এছাড়া গুজরাটের বরোদায় রামনবমীর মিছিলে পাথর ছোড়ার ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ফতেপুরা এলাকায় মিছিলে পাথর ছোড়ার ঘটনা নিয়ে গোলমাল হলেও নির্দিষ্ট রুটেই মিছিল পার হয়ে যায়। তবে এতে কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কেউ আহত হননি।

শিবসেনা গোষ্ঠীর নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, “আমরা এই ভয় পাচ্ছিলাম যে দাঙ্গা হতে যাচ্ছে। মহারাষ্ট্রে স্বরাষ্ট্র বিভাগ বলে কিছু আছে বলে মনে হয় না।”

ভারতে প্রতিবছরই রামনবমীকে কেন্দ্র করে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়। এর আগে ২০১৮ সালে আসানসোলে রামনবমীর দিনেই হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা বেঁধেছিল। সেবছর গোটা রাজ্যে রামনবমীকে কেন্দ্র করে দাঙ্গায় প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত পাঁচজন। এছাড়া ২০২২ সালেও পশ্চিমবঙ্গে রামনবমীকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়েছিল।

Link copied!