• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘খুবই আগ্রহী’ চীন-বেলারুশ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৩, ১২:১২ পিএম
ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘খুবই আগ্রহী’ চীন-বেলারুশ

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সহসাই বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই। এরকম এক পরিস্থিতিতে ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনের প্রেসিডেন্ট ও বেলারুশ নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো শান্তিপূর্ণ সমাধানে ‘খুবই আগ্রহ’ প্রকাশ করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলারুশ প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো চীন সফর করেছেন। বুধবার বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পরে এক বিবৃতিতে ইউক্রেন নিয়ে নিজেদের ওই অবস্থানের কথা জানান দুটি দেশের নেতারা।

এদিকে জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানিয়ে গত সপ্তাহে চীন ‘শান্তি আলোচনার পরিকল্পনা’ ঘোষণা করেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনায় লুকাশেঙ্কো বলেছেন, তার দেশ ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের জন্য বেইজিংয়ের পরিকল্পনাকে ‘পুরোপুরি সমর্থন’ করে।

মূলত চীন তার শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ইকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করার জন্য পাঠানোর কয়েকদিন পরেই বেইজিংয়ে সফর করলেন লুকাশেঙ্কো। এছাড়া এই একই সময়টাতে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে সফর করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তনি ব্লিংকেন।

বেলারুশের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা বেল্টা জানিয়েছে, ইউক্রেনে চলমান সংঘর্ষের বিষয়ে বুধবার চীন ও বেলারুশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে উভয় দেশ ইউক্রেনে যত দ্রুত সম্ভব শান্তি প্রতিষ্ঠায় খুবই আগ্রহী।

আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কা ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সহায়তা করেছেন এবং পর্যবেক্ষকরা তার বেইজিং সফরকে রাশিয়া ও তার মিত্রদের সাথে চীনের বন্ধনের আরেকটি প্রতীক হিসাবে দেখছেন।

তবে চীনের ঘোষণা করা শান্তি পরিকল্পনার ১২ দফা নথিতে “সকল দেশের সার্বভৌমত্বের” প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া এটিতে স্পষ্টভাবে রাশিয়াকে ইউক্রেন থেকে তার সৈন্য প্রত্যাহার করার কথা না বলা থাকলেও পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তা ‘একতরফা নিষেধাজ্ঞা’ নিয়ে ইউক্রেনের নিন্দা করা হয়েছে। মূলত এই নিন্দার মাধ্যমে ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের পরোক্ষভাবে সমালোচনা করেছে বেইজিং।

প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো আরও বলেছেন, “আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার বিষয়ে চীন যে উদ্যোগটি উত্থাপন করেছে তা সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করছি। বিশ্বব্যাপী সংঘর্ষ এড়াতে বা প্রতিরোধ করতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো প্রথম এবং সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত।”

ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, “তিনি এর কিছু অংশের সঙ্গে একমত (চীনের শান্তি পরিকল্পনার)। শান্তিপূর্ণ সমাধানে যুক্ত হওয়ার জন্য চীনের স্বপ্রণোদিত ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ এটি।”

যদিও এখন পর্যন্ত জেলেনস্কির শীর্ষ সম্মেলনের আহ্বানে প্রকাশ্যে সাড়া দেয়নি বেইজিং।

অন্যদিকে লুকাশেঙ্কোর সাথে বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট স্নায়ু যুদ্ধের সকল মানসিকতা পরিত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। শি জিনপিং বলেছেন, “দেশগুলোকে বিশ্ব অর্থনীতির ‘রাজনীতিকরণ’ বন্ধ করা উচিত এবং এমন কিছু করা উচিত যা যুদ্ধবিরতি, যুদ্ধ বন্ধ এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানে সহায়তা করবে।”

এছাড়া চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে চীন-বেলারুশের সম্পর্ককে ‘সব আবহাওয়ার ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। বিরল এই শব্দটি চীন এতদিন শুধুমাত্র অন্য একটি দেশের জন্য ব্যবহার করে এসেছে। আর সেটি হচ্ছে পাকিস্তান।

সংঘাতের শুরু থেকেই রাশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল বেলারুশ। মস্কোকে কিয়েভ আক্রমণের জন্য বেলারুশিয়ান সীমান্তকে একটি লঞ্চপ্যাড হিসাবে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিল দেশটি যদিও এ প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল।

Link copied!