কম্বোডিয়ায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় রোববার। শক্তিশালী প্রতিপক্ষহীন একতরফা সাধারণ নির্বাচনে দেশটির ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী জয়ের দাবি করেছেন। এরপরই দেশটির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে দেশটিতে কিছু বিদেশি সহায়তা কর্মসূচিও স্থগিত করছে ওয়াশিংটন।
এ রকম এক পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিনের শাসক একটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী নির্বাচনে সব কটি আসনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের তিন দিনের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ৭০ বছর বয়সী হুন সেন। চলতি বছরের আগস্টে তার ছেলে সেনাপ্রধান হুন মানেটের হাতে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন।
বুধবার (২৬ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, কম্বোডিয়ায় প্রায় চার দশক ধরে শাসন করছেন তিনি। অনেকটা কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছেন। বিতর্কিত নির্বাচনে একতরফা বিজয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আওয়াজ তুলেছে দেশটির বেশির ভাগ মানুষ। আর ক্ষমতায় দেখতে চান না তারা। অনেকে ব্যালট পেপার ছিড়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। তার জ্যেষ্ঠ ছেলে সেনা কমান্ডার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় আসার পথ চেয়েছিলেন। হুন সেনের পদত্যাগের সেই পথ পরিষ্কার হয়ে গেল।
হুন সেন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বুধবার এক ঘোষণায় বলেন, “আমার ছেলে আগামী ১০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেবে। জনগণকে কাছ থেকে বোঝার জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়ে আর থাকতে চাই না। তিনি ক্ষমতায় থাকলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, এই শঙ্কা থেকে পদত্যাগ করেছেন বলেও মন্তব্য করেন।”
গত রোববার দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শক্তিশালী প্রতিপক্ষহীন একতরফা ওই নির্বাচনে ভূমিধস জয়ের দাবি করে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের রাজনৈতিক দল কম্বোডিয়া পিপলস পার্টি (সিপিপি)। সমালোচকরা দেশটির এবারের সাধারণ নির্বাচনকে ‘ব্যাপক প্রতারণা’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এমনকি দেশটির শক্তিশালী কোনো বিরোধী দল এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। আর যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, তাদের হুন সেনের সিপিপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সক্ষমতাও নেই।
সিপিপির সঙ্গে এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছে আরও ১৭টি রাজনৈতিক দল। যদিও এই ১৭টি দলের বেশির ভাগই নামসর্বস্ব। তাদের কোনো দলই এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে একটি আসনেও জয় পায়নি। আর তাই ব্যাপক প্রশ্নবিদ্ধ এই নির্বাচনের পরপরই কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি কিছু সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ৩৮ বছর ধরে কম্বোডিয়ার ক্ষমতায় আছেন হুন সেন। নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগকে পাত্তাই দেননি তিনি। নির্বাচনে জয়ী হলে তার বড় ছেলে হুন মানেতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :