• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৪, ০২:০৬ পিএম
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে
ড. ইউনূস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের একক বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের নানামুখী পণ্যের রপ্তানি বাজার হয়ে উঠেছে দেশটি। শুধু তাই নয়, নানা প্রকল্পে ও খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল বিনিয়োগও রয়েছে বাংলাদেশে। এসব কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অনেক গভীর ও জোরালো। যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের বদল দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে কখনও প্রভাব ফেলে না।

এর মধ্যেই বুধবার (৭ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে বড় ব্যবধানে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছেন ট্রাম্প। নির্বাচনের প্রচারের সময় ট্রাম্প অর্থনীতি, অভিবাসনসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের বিজয়ের পর বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বিষয়ে বেশি জোর দেবেন ট্রাম্প সরকার।

দ্বিপাক্ষিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ট্রাম্পের নজর থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও বেড়ে যাবে। অর্থনীবিদরা মনে করছেন, কম দামের পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের সুনাম রয়েছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে বাংলাদেশ যতটা পণ্য আমদানি করে, তার চেয়ে রপ্তানি করে থাকে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদার বড় একটা অংশ সরবরাহ করে বাংলাদেশ।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন হলেও বৈদেশিক নীতির ওপর তার প্রভাব খুবই কম। তাছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশ মার্কিনমুখী গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরছে। যে কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ও সমর্থন আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর ওপর ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী হওয়ায় ব্যবসার দিকেই তার নজর বেশি থাকবে। তাছাড়া চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্পের শুল্ক পরিকল্পনা কার্যকর করা হলে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। পাশাপাশি দ্বৈত কর এড়ানোর জন্যও চুক্তি করেছে। বিগত ২০১৭ সালে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ ছিল ৪৬ কোটি ডলার, যা ২০১৬ সালের তুলনায় ০.৪ শতাংশ বেশি। এরপর ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বার্ষিক টিকফা বৈঠকে বাংলাদেশের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের তুলার প্রবেশের সুযোগ, ডিজিটাল অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার হবে

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি পণ্যের মধ্যে অন্যতম তৈরি পোশাক, জুতা, টেক্সটাইল সামগ্রী ও কৃষিপণ্য। আর বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র রপ্তানি করে কৃষিপণ্য খাদ্যশস্য, বীজ, সয়াবিন, তুলা, গম, ভুট্টা, যন্ত্রপাতি, লোহা ও ইস্পাত পণ্য।

ইউএস ওটেক্সা তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক পোশাক আমদানিতে ৪ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে যায়। তবে আগামীতে এই সমস্যা কেটে উঠবে দুই দেশ-এমনটা মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব সাব্বির আহমেদ চৌধুরীর ধারণা ট্রাম্প আসায় বাংলাদেশের সঙ্গে খুব একটা সম্পর্কের ঘাটতি হবে না। কারণ অর্থনৈতিক নানান কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত আছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, “শুধু ভারতের ইস্যু নয়, নিজেদের স্বার্থের দিকেও নজর রাখবে ট্রাম্প প্রশাসন। সুতরাং বাণিজ্যিক কারণে বরং সম্পর্ক আরও জোরালো হতে পারে।”

এদিকে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। ট্রাম্পের সময়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও উচ্চতায় যাবে বলে আশা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও উন্নতির শিখরে যাবে বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও। তিনি বলেন, ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দুই দলেই ড. ইউনূসের বন্ধু আছেন। ফলে ট্রাম্পের জয়ে সম্পর্ক আরও গভীর হবে।

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!