ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে আবারও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় একজন নারীসহ নয়জন নিহত হয়েছেন। রাজ্যের খামেনলোক এলাকায় গভীর রাতে গুলি চালানোর ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৪ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য ইম্ফলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের শরীরে কাটা দাগ এবং একাধিক বুলেটের আঘাত রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
নতুন করে সহিংসতার এ ঘটনায় রাজ্যে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় বড় ধাক্কা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। জাতিগত সংঘর্ষের কারণে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যটিতে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে।
এছাড়া গতকাল রাতের ঘটনার পর শিথিল কারফিউ আবারও কঠোর করা হয়েছে। রাজ্যের খামেনলোক এলাকাটি কাংপোকপি এবং ইম্ফল পূর্ব জেলার সীমান্তের কাছে অবস্থিত। গত কয়েকদিন ধরে এ এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মেইতেই সম্প্রদায় মণিপুরের জনসংখ্যার কমপক্ষে ৫০ শতাংশ। তারা তফসিলি উপজাতি (এসটি) হিসেবে শ্রেণীভুক্ত হওয়ার জন্য গত কয়েক বছর ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিল। ভারতে যে সব সম্প্রদায় ঐতিহাসিকভাবে সমান সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে, তাদের এসটি শ্রেণিভুক্ত করে সরকারি চাকরি, কলেজে ভর্তি ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির আসন সংরক্ষণ করা হয়।
গত মাসে মণিপুর হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে মেইতেই সম্প্রদায়ের দাবি বিবেচনার নির্দেশ দেয়। কিন্তু রাজ্যের অন্য উপজাতিগুলোর মধ্যে এতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। মেইতেইদের এসটি মর্যাদা দেওয়া হলে তাদের চাকরির জন্য তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে। এর প্রতিবাদ জানাতে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়নের ডাকা এক মিছিলে হাজার হাজার লোক যোগ দেয়।
এই আন্দোলন ব্যাপক সহিংস আকার ধারণ করে। সংঘর্ষে ১০০ জন প্রাণ হারান। আরও অনেক আহত হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
আপনার মতামত লিখুন :