তাইওয়ানের আকাশে ১৯টি চীনা যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশের অভিযোগ করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এসব যুদ্ধবিমান তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করেছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
বুধবার (১ মার্চ) দ্বীপ রাষ্ট্রটির দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে জে-১০ নামক চীনা যুদ্ধবিমানগুলোর অনুপ্রবেশের কথা জানায় তাইওয়ান। একই দিনে আরও ছয়টি চীনা সামরিক বিমান এবং তিনটি নৌযান তাইওয়ানে প্রবেশ না করলেও দেশটির সীমান্তের কাছ দিয়ে গেছে। যদিও তারা তাইওয়ানের তুলনায় চীনের উপকূলের কাছাকাছি ছিল।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাইওয়ানের সামরিক বাহিনী এ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। পাশাপাশি বিমানবাহিনীকে যুদ্ধবিমান প্রস্তুত ও উপকূলীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বশাসিত দ্বীপ রাষ্ট্র তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্নতাবাদী ভূখণ্ড হিসেবে মনে করে চীন। তারা সর্বদা তাইওয়ানকে বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। আর এ কারণেই বছরের পর বছর ধরে এ দ্বীপের কাছে চীনের সামরিক তৎপরতা অব্যাহত থাকে।
গত কয়েক বছর ধরে সঙ্গে ‘এক চীননীতি’ বাদ দিয়ে তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক গড়ে তুলছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে চীন-মার্কিন উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাইওয়ান ঘিরে নিয়মিত সামরিক মহড়া চালাচ্ছে বেইজিং। তাইওয়ানের দাবি, দ্বীপটি দখলের মহড়া দিচ্ছে চীনের সেনাবাহিনী।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত মানচিত্রে দেখা গেছে, যুদ্ধবিমানগুলো তাইওয়ানের চেয়ে চীনা উপকূলের বেশি কাছাকাছি ছিল। যুদ্ধবিমানগুলো তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রবেশ করলেও তাইওয়ান প্রণালীর সংবেদনশীল মধ্যরেখা অতিক্রম করেনি। এই রেখাকে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে সীমানা রেখা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অপরদিকে বেইজিং বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে চীনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে তাইওয়ান। তাই নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এমন অভিযান পরিচালনার অধিকার চীনের রয়েছে।
এর আগে চীনের সামরিক বাহিনীকে তাইওয়ান প্রণালিতে উচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখার খবর পাওয়া যায়। ওই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় বেইজিং।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম আরটি জানায়, সম্প্রতি তাইওয়ান প্রণালির ওপর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধবিমান উড়ে যাওয়া কেন্দ্র ওই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি বলে উল্লেখ করেছে চীন। তার পরই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বেইজিং।
এর আগেও মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে গেলে এই সীমানা রেখাকেও অতিক্রম করে তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীন।
আপনার মতামত লিখুন :