অনেক কারণেই শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। যেমন খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, ফর্মুলা দুধ অথবা শরীরিক কোনো অসুস্থতা। এ অবস্থায় নিশ্চিন্তে ঘরোয়া কিছু উপায় কাজে লাগতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
আপেল রস
ফাইবারের অভাবে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। আপেলে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে খুব উপকারী। খোসাসহ একটি আপেলের রস তৈরি করে বোতলের মাধ্যমে শিশুকে পান করাতে পারেন। দিনে এক বোতল রস আপনার শিশুকে সহজেই মল ত্যাগ করতে সহায়তা করতে পারে।
আলুবোখারা
আলুবোখারা হলো প্রাকৃতিক জোলাপ। আলুবোখারার রস শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে লড়াই করার জন্য বেশ কার্যকর। তাই এটির রস বাচ্চাদের মলত্যাগকে সহজ করতে সাহায্য করে। আলুবোখারার রস খাওয়ার পর মলত্যাগ করতে ৪-৫ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
বাদামি চিনি
যদি আপনার বাচ্চার বয়স এক বছরের বেশি হয় তবে বাদামী চিনির দ্রবণ কোষ্ঠকাঠিন্যের নিরাময়ে দারুণভাবে কাজ করতে পারে। আধা চা চামচ চিনি ও ৫ চা চামচ পানি মিশ্রিত করে দ্রবণটি শিশুকে দিনে দুবার দিতে পারেন। খেজুরের চিনি বা বাদামী চিনি ব্যবহার করুন। সাদা চিনি ব্যবহার করবেন না।
টমেটো
৬ মাসের বেশি বয়সী বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে টমেটো অত্যন্ত উপকারী। বাধাহীন মলত্যাগের জন্য আপনি আপনার শিশুকে টমেটোর রস দিতে পারেন। ১ কাপ পানিতে একটি ছোট টমেটো সেদ্ধ করে পেস্ট করে ছেঁকে ঠান্ডা করে নিন। কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে এই রস প্রতিদিন ৩-৪ চা চামচ করে আপনার তাকে খেতে দিন।
মৌরি বীজ
মৌরি বীজ হজমের জন্য দারুণ উপকারী। ১ কাপ পানিতে ১ চা চামচ মৌরি বীজ ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন। এবার ছেঁকে নিয়ে শিশুকে দিনে ৩-৪ বার খেতে দিন। বাচ্চা যদি ৬ মাসেরও কম বয়সী হয় তবে দিনে ২ বার দিতে পারেন। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
পেঁপে
পেঁপে ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস। এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে তাই খুব কার্যকর। ৬ মাসের বেশি বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে পেঁপে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার এক দুর্দান্ত প্রতিকার। পেঁপের শরবত বা স্মুদি শিশুর মলত্যাগ নিয়মিত করার জন্য দেওয়া যেতে পারে।
নাশপাতি
নাশপাতি কুচি কুচি করে কেটে নিয়ে রস বের করুন। এবার রসের সমান পরিমাণ পানিতে মিশিয়ে শিশুকে খেতে দিন যাতে তার মলত্যাগে সহায়তা হয়। নাশপাতি চার মাস বয়সের পরে একটি শিশুকে দেওয়া যেতে পারে।
হালকা গরম পানিতে গোসল
বাথটাব হালকা গরম পানি নিয়ে পরিপূর্ণ করুন। তারপর এতে কয়েক চামচ বেকিং সোডা দিয়ে শিশুকে গোসল করান। এতে মলদ্বারের পেশীগুলো খুলতে এবং মলত্যাগ করতে সহায়তা করবে।
মালিশ
পেটে মালিশ শিশুদের মলত্যাগকে সহজ করার একটি দুর্দান্ত উপায়। মলগুলোকে মলদ্বার অঞ্চলে চলে যাওয়ার জন্য বা উদ্দীপিত করার জন্য আপনাকে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরিয়ে আলতো করে হাত দিয়ে মালিশ করুন। মালিশের জন্য আপনি যেকোনো ভালো শিশুদের তেল ব্যবহার করতে পারেন।
ব্যায়াম
প্রাপ্তবয়স্কদের মতো বাচ্চাদেরও ঘুরে বেড়ানো বা ব্যায়াম করা মসৃণ মলত্যাগের জন্য খুব সহায়ক। শিশু যদি হামাগুড়ি দেওয়ার পর্যায়ে থাকে তবে আপনি বাচ্চাকে ঘরের চারপাশে ঘুরতে উৎসাহিত করতে পারেন। যদি আপনার শিশুটি আরও কম বয়সী হয় তবে শিশুর পা দুটিকে সামনে–পেছনের দিকে, গোল গোল করে বা পাম্পিং গতিতে সরিয়ে তাকে ব্যায়ামে সাহায্য করতে পারেন। এটি নবজাতকের কোষ্ঠকাঠিন্যের সর্বাধিক কার্যকর প্রতিকারগুলোর মধ্যে একটি।
তবে আপনার শিশুর জন্য কোনো ঘরোয়া প্রতিকার অবলম্বন করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।