স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে শাকসবজি খেতে হয়। স্বাস্থ্যবিদরাও প্রতিদিন অন্তত তিন রঙের সবজি ও ফল ডায়েট চার্টে রাখার পরামর্শ দেন। এতে পর্যাপ্ত পুষ্টির ব্যালেন্স হয়। শাক বা সবজি দুইভাবেই খাওয়া যায় কচু। কচু এমন একটি উদ্ভিদ, যার প্রতিটি অংশই খাওয়া যায়। কচুর পাতা, ডগা, মুখী, লতি সবকিছুই আলাদা আলাদা খাদ্য উপাদান ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ির আশপাশে এবং পতিত জমিতে কচু জন্মায়। গ্রাম পেরিয়ে এটি এখন শহরের বাজারেও পাওয়া যাচ্ছে।
কচুর সব ধরনের মধ্যে পুষ্টিগুণে ভরপুর কচুশাক। রান্না করা প্রতি ১০০ গ্রাম কচুশাকের মধ্যে খাদ্য শক্তি রয়েছে ৫৯৪ কিলোক্যালরি, শর্করা ৩৪.৬গ্রাম, চিনি ০.৪৯ গ্রাম , আঁশ ৫.১ গ্রাম, চর্বি ০.১১ গ্রাম, প্রোটিন ০.৫২ গ্রাম, ভিটামিন বি–১০.১০৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি–২০.০২৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি–৩০.৫১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি–৫০.৩৩৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি–৬০.৩৩১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৫ গ্রাম, ভিটামিন ই ২.৯৩ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৮ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৭২ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ০.৪৪৯ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৭৬ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪৮৪ মিলিগ্রাম, জিংক ০.২৭ মিলিগ্রাম পাওয়া যায়।
কচুশাক খাওয়ার যত উপকারিতা জানব এই আয়োজনে।
- যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা কচুশাক খেতে পারেন। কচুশাকে থাকা আঁশ খাবার হজমে সাহায্য করে।
- যারা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তারা কচুশাক খেতে পারেন। কারণ কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে, যা রক্তশূন্যতায় ভোগা রোগীর জন্য উপকারী। ডাক্তাররা কচুশাক খাওয়ার পরামর্শ দেন।
- কচুশাকে ভিটামিন ‘সি’ থাকে। এর লৌহ উপাদান আপনার দেহে সহজে আত্তীকরণ হয়ে যায়। ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
- শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ সচল রাখতে কচুশাক অনেক বেশি কার্যকর। এই শাকের আয়রন ও ফোলেট রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। ফলে অক্সিজেন সংবহন পর্যাপ্ত থাকে। এতে উপস্থিত ভিটামিন কে রক্তপাতের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
- কচুশাকের সব চেয়ে বড় উপকারিতা হলো এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাংগানিজ ও ফসফরাস। দাঁত ও হাড়ের গঠনে এবং ক্ষয়রোগ প্রতিরোধে কচুশাকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- কচুশাকে নানা রকমের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান বিদ্যমান। গর্ভবর্তী মা ও শিশুর জন্য যা অনেক উপকারী। গর্ভবতী নারীরা ভিটামিন ও আয়রনের চাহিদা সহজে পূরণের জন্য কচু বা কচুশাক খেতে পারেন।
- কচুশাক রক্তের কোলেস্টরেল কমায়।
- উচ্চ রক্ত চাপের রোগীদের জন্য কচুশাক উপকারী।
- নিয়মিত কচুশাক খেলে কোলন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে।
- কচুশাকে ভিটামিন এ থাকে, যা রাতকানা এবং ছানি পড়াসহ চোখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধসহ দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে দেয়।