বর্তমানে ক্যারিয়ারের তুঙ্গে ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান। সর্বশেষ সিনেমা ‘প্রিয়তমা’ হিট হওয়ায় এখন পারিশ্রমিকও বাড়িয়ে করেছেন কোটি টাকা। কিন্ত পারিশ্রমিক নিয়েও শেষ করছেন না আগে থেকে আটকে থাকা বেশ কয়েকটি সিনেমার কাজ। এসব সিনেমার শুটিং শেষ হয়েছে ২০ থেকে ৮৫ ভাগ। এতে ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন প্রযোজকেরা। তাই প্রযোজক-পরিচালকের কেউ কেউ এই ক্ষতির জন্য শাকিবকেই দায়ী করেছেন। এমনকি বড় অঙ্কের লোকসানের মুখে পড়ে প্রযোজকদের অনেকেই মামলা করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন।
দেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলোর’ এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ৯ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৪ সালে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসকে নিয়ে ‘মাই ডার্লিং’ ছবির শুটিং শুরু করেন পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবর। এক বছরে ছবির ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়। এরপর শাকিবের শিডিউল জটিলতায় ছবিটি আটকে যায়। জি সরকার পরিচালিত আরেক সিনেমা ‘লাভ ২০১৪’ ছবিটির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। ছবির কাজ ৫০ ভাগ শেষ হলেও ৯ বছরে বাকি অংশের কাজ শেষ হয়নি। এরজন্য শাকিব খানকে দায়ী করেন নির্মাতা ও প্রযোজক।
এর আগে শাকিব খান ও শাবনূরকে নিয়ে ২০০৮ সালে নজরুল ইসলাম খান শুরু করেন ‘স্বপ্নের বিদেশ’। ২০০৯ সালের শুরুর দিকে ছবির প্রায় ৮৫ ভাগ শেষ হয়। ৯০টি দৃশ্যের মধ্যে এখনো ১৬টি দৃশ্যের শুটিং বাকি। সাত বছর ধরে থেমে আছে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামের আরেক সিনেমার শুটিং। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এই ছবির শুটিং শুরু হয়। অ্যাকশন-থ্রিলার ঘরানার ছবিটি শুটিং শেষ করে ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু ছবির ২০ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর থেমে আছে শুটিং।
এসব বিষয় নিয়ে মনিরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, “আমি ২০১৮ সালে যখন সমিতিগুলোর কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম, তখনই বলেছিলাম সমিতি মীমাংসা করে না দিলে বিষয়টি নিয়ে শাকিবের বিরুদ্ধে আদালতে যাব। কিন্তু ওই সময় অপু বিশ্বাস শিডিউল দিলেও শাকিব দেননি। তখন শাকিব খান নায়িকা পরিবর্তন করে অন্য নায়িকা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। এমনকি বুবলীকেও নেওয়ার কথা বলেছিলেন। যদি তা না হয়, নায়ক-নায়িকার আলাদা আলাদা শট নিয়ে শুটিং শেষ করতে বলেছিলেন। কিন্তু ছবিটির শুটিং আগে যতটুকু, যেভাবে হয়েছিল, নায়িকা পরিবর্তন করা বা আলাদা করে শট নেওয়া সম্ভব ছিল না। নায়িকা পরিবর্তন করলে সব ফুটেজ ফেলে দিয়ে নতুন করে পুরো শুটিংই করতে হতো। এতে দ্বিগুণ টাকা খরচ হতো। নায়িকা বদল করতে রাজি না হওয়ায় শাকিবের আর শিডিউল পাওয়া যায়নি।’
শাকিবের বিরুদ্ধে মামলা করার ইঙ্গিত দিয়ে এই প্রযোজক বলেন, “আমার কষ্টের কোটি টাকা জলে যাচ্ছে। সামনের সপ্তাহে চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে যাওয়ার কথা আছে। ফিরে একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার কাছে লিখিত সব ডকুমেন্টস আছে। মামলা করব। আর বাড়তি দেওয়া পাঁচ লাখ টাকাও আমাকে ফেরত দিতে হবে।”
এর আগে শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অসদাচরণ ও মিথ্যা আশ্বাসের অভিযোগ এনেছিলেন প্রযোজক রহমত উল্লাহ। এরপর ঢাকার সিএমএম কোর্টে তিনি মানহানির মামলা করেন।