ঢাকার উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জীবন দিয়ে অন্তত ২০ শিক্ষার্থীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন শিক্ষিকা মাহরীন চৌধুরী। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব থেকে একচুলও নড়েননি এই শিক্ষিকা। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে দেশের মানুষের চোখে আজ তিনি সাহসিকতার প্রতীক।
আত্মত্যাগ ও সাহসিকতার আলোকবর্তিকা শিক্ষক মাহরীন চৌধুরীকে নিয়ে এবার আবেগঘন এক পোস্ট দিয়েছেন সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর। যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, হেরে গেছেন মা মাহরীর, জিতে গেছেন শিক্ষিকা মাহরীন ম্যাডাম।
আজ বুধবার সকালে এক ফেসবুক পোস্টে আসিফ লিখেছেন, ‘দৌড়াও, ভয় পেওনা, আমি আছি… প্রয়াত শিক্ষিকা মাহরীন চৌধুরী। নিজের দুই সন্তানের মায়া, নিজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যও অমোঘ মায়া! হেরে গেলেন মা মাহরীন, জিতে গেলেন শিক্ষিকা মাহরীন ম্যাডাম। জিতিয়ে গেলেন শিক্ষকতার মত মহান পেশাকে।’
গায়ক আরও লিখেছেন, ‘অনিয়মের দেশে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি চেয়ে আরও ভয়াবহ অনেক কিছুই চলে আসবে সামনে, আমাদের নিয়তি এমনই। ভবিষ্যতের আলো বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় নিজেই পরপারে চলে গেলেন ম্যাডাম মাহরীন চৌধুরী। নিয়তির নিষ্ঠুরতাকে ব্যতিক্রম প্রমান করে মা, বাবা, শিক্ষক- এই তিনে কোন পার্থক্য রাখতে দেননি দ্য সিক্রেট সুপারস্টার ম্যাম মাহরীন। বিনম্র শ্রদ্ধা। শোক পরিণত হউক শক্তিতে।’
সবশেষে নিহত বাচ্চাদের কথা স্মরণ করে আসিফ লিখেছেন, ‘আকস্মিক ঝড়ে ঝরে যাওয়া সব ফুলগুলো প্রস্ফুটিত হউক জান্নাতের বাগানে। আমিন।’
বলা দরকার, গেল সোমবার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিজের জীবন উৎসর্গ করে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন শিক্ষিকা মাহরীন চৌধুরী (৪২)।
গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাবার বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ি চৌধুরীপাড়া গ্রামে। এরপর বিকাল ৪টার দিকে বাড়ির সামনে থাকা বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। শেষে পারিবারিক করস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন মাহরীন চৌধুরী।