সেদিন ছিল ২৫ জুন। আজ থেকে ১৪ বছর আগে। হঠাৎ করেই সুদূর আমেরিকা থেকে খবর এলো তিনি নেই। যাকে বহুবার সম্বোধন করা হয়েছে পপ িসম্রাট নামে। সেই পপ সাম্রাজ্যের অধিপতি মাইকেল জ্যাকসন আর নেই। মৃত্যু হয়েছে তার। কিন্তু মাইকেলের কি মৃত্যু হতে পারে? জ্যাকসন যুগের কি অবসান হতে পারে? ঠিক ১৪টা বছর চলে গেছে, তবু সেই প্রশ্ন ভক্তদের মনে। আর সেই অনুরাগীদের কাছে রয়েছে উত্তরও, এককথায় এ যুগের অবসান সম্ভব নয়। মাইকেল জ্যাকসনের সাম্রাজ্যের অবসান সম্ভব নয়। মুনওয়াক তো অমর। মাইকেল জ্যাকসন মরতে পারে না।
মাইকেল ভক্তদের বিশ্বাস, এখনো বেঁচে আছেন তিনি। খ্যাতি আর সাফল্যের মায়াজালে তিনি নিঃসঙ্গ অনুভব করছেন বলেই এ জীবন থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। ছদ্মবেশে ঘুরছেন দেশ থেকে দেশে। এগুলো মোটেই বানানো কথা নয়। বিশ্বের অধিকাংশ মাইকেল ভক্তের মতে, তিনি এখনো বেঁচে আছেন। শুধু লোকচোখের অন্তরালে যেতেই তার মৃত্যুর খবর ও ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। অনেকে তো দাবি করেই বসেছেন, তিনি মৃত্যুর পরও কোথায়, কবে উপস্থিত ছিলেন।
মাইকেলের পুরো জীবনটাই যেমন গিয়েছে হাজারও গুঞ্জনকে ঘিরে। মৃত্যুর পরেও সেই গুঞ্জনের হাত থেকে নিষ্কৃতি নেই। মাইকেলের মৃত্যুর পর মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যালবামের বিক্রয়ের শীর্ষ থাকা আর বছরজুড়ে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সংখ্যায় চোখ কপালে উঠেছিল অনেকের।
‘কিং অব পপ’ নামে দুনিয়াজুড়ে পরিচিতি লাভ করা মার্কিন সংগীতশিল্পী মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যুর জন্য দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন মাত্রার ওষুধ সেবনকে দায়ী করা হয়। কিন্তু এ নিয়ে বিতর্ক বোধ হয় কোনো দিনই শেষ হবে না। শুরুতে জানানো হয়েছিল, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটেছে। তখন হুট করেই খবরে আসছে ডেমারোল নামের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যথানাশক ইনজেকশন নেওয়ার কারণেই জ্যাকসনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখানেই শেষ নয়, এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই ধাঁধা লাগে গোটা বিশ্বের চোখে। প্রশ্ন ওঠে তাহলে কি মাইকেল আত্মহত্যা করেছেন?
মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যুর জন্য তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক কনরাড মুরকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। পপস্টারের মৃত্যুর জন্য অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও তার গাফিলতিই দায়ী বলে লস অ্যাঞ্জেলেসের আদালত রায় দেয়। যদিও মুরের আইনজীবীরা দাবি করেন, জ্যাকসন স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত মাত্রায় ওই ওষুধটি নিয়েছিলেন। তবে কি এটি হত্যা, নাকি আত্মহত্যা হিসাব কষে দুইয়ে দুইয়ে চার আজও মেলেনি!
১৯৮২ সালে প্রকাশিত মাইকেল জ্যাকসনের ষষ্ঠ একক অ্যালবাম ‘থ্রিলার’ বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। সে সময় থেকেই তাকে ‘কিং অব পপ’ বলা শুরু হয়। দীর্ঘ সময় ধরে ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যবসাসফল গানের অ্যালবামের স্থানটি দখল করে ছিল ‘থ্রিলার’। তাকে বলা হতো সর্বপ্রথম কৃষ্ণাঙ্গ তারকা, যিনি জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সব মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছিলেন। মানুষের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা সে সময়কার উদীয়মান আফ্রিকান-আমেরিকান সংগীতশিল্পীদের মধ্যে দারুণ অনুপ্রেরণা তৈরি করেছিল। আশার, কেইন ওয়েস্ট, উইকন্ড-এর মতো এখনকার অনেক জনপ্রিয় কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পীই বলেছেন, তারা মাইকেল জ্যাকসন দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত।


































