• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

৪ শিক্ষার্থীকে মারধর করে হল থেকে বের করার অভিযোগ


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৩, ০৬:৩৫ পিএম
৪ শিক্ষার্থীকে মারধর করে হল থেকে বের করার অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চার শিক্ষার্থীকে মারধর করে মুচলেকা নিয়ে হল ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে মাস্টারদা সূর্যসেন হলের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২৩ মে) বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত হলটির ৪৫০ নম্বর কক্ষে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। এর আগে হলটির ৫৩২ নম্বর কক্ষ থেকে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীদের ফোন কেড়ে ডেকে নেওয়া হয়।

এদিকে বুধবার (২৪ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এর আগে তারা হলটির প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

ভুক্তভোগীরা হলেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী আলম বাদশা, একই বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী লুৎফুর রহমান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের আল আমীন ও একই সেশনের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান। তারা সকলেই হলটির ৫৩২ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা বলেন, “হলটির ৫৩২ নম্বর কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ সেশনের দর্শন বিভাগের সুমন আহমেদ নামের এক প্রাক্তন ছাত্র ওই কক্ষে থাকতেন। বিভিন্ন সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রুমের সকলকে মানসিক টর্চারের মধ্যে রাখতেন। সম্প্রতি কক্ষের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে ঝামেলা বাধলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন সুমন। এছাড়া ১২ ঘণ্টার মধ্যে হল ছাড়ার হুমকি দেন। তখন বিষয়টি হলের হাউস টিউটরকে আমরা জানাই। পরে তাকে জানানো হয় আপনি যে সমস্যা করছেন এ কারণে আপনাকে হল ছেড়ে চলে যেতে হবে। আর এ বিষয়টি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমানকে জানায় সুমন। এর ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদের মাধ্যমে ওই রুমে অবস্থানরত সকল শিক্ষার্থীকে নিজ কক্ষে ডাকেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমান। সেখানে গেলে আমাদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে ফেসবুক ঘাটাঘাটি করেন তারা। এরপর সবাইকে আলাদা আলাদাভাবে মারধর করেন।”

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আলম বাদশা বলেন, “দফায় দফায় আমাদের সবাইকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। সবাইকে আলাদা আলাদাভাবে কক্ষে নিয়ে সিয়াম রহমান আমাদের নির্যাতন করেন। সেখানে আমরা প্রায় তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ছিলাম। শেষ পর্যায়ে এসে আমাদেরকে জোরপূর্বক মুচলেকা দিতে বাধ্য করে।”

এদিকে অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তারা হলেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হামিদ কারজাই, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ জামান অভি, আব্দুল আহাদ, আপ্যায়ন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম নীরব ও উপ- আইন সম্পাদক মুহাম্মদ তালহা।

এ ব্যাপারে হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হামিদ কারজাই বলেন, “এমন কিছুই ঘটেনি। যেহেতু আমি ছাত্রলীগের রাজনীতি করি, সামনে হলের ক্যান্ডিডেট। তাই আমার ক্লিন ইমেজ নষ্ট করার জন্য আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে।”

এদিকে হলটির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক অভিযুক্ত সিয়াম রহমানসহ বাকি অভিযুক্তদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।

হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, “দুপুরে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তার ভিত্তিতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হলের সিনিয়র হাউস টিউটর শহীদ কাজী এবং দুই ফ্লোরের দুই হাউস টিউটর মাহমুদুল হাসান ও আরিফুল ইসলামকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।”

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!