• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

২ সন্তানসহ মাকে হত্যার দায়ে যুবককে মৃত্যুদণ্ড


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪, ০২:১৬ পিএম
২ সন্তানসহ মাকে হত্যার দায়ে যুবককে মৃত্যুদণ্ড
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আইয়ুব আলী সাগর। ছবি : সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে সৎ খালা ও তার দুই ছেলেকে হত্যার দায়ে ভাগিনা আইয়ুব আলী সাগরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আইয়ুব আলী সাগর জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার নন্দিগাতি গ্রামের মৃত মকছেদ মোল্লার ছেলে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আব্দুর রহমান ও স্টেনোগ্রফার রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, নিহত রওশনারা তার দুই শিশু ছেলেসহ বেলকুচি উপজেলার মবুপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। তার স্বামী সুলতান আলী তার খোঁজখবর নিতেন না। রওশনারা তাঁত ফ্যাক্টরিতে সুতার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার সৎ ভাগিনা আইয়ুব আলী ২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রওশনারার বাড়িতে আসেন। ওই সময়ে তিনি রওশনারার ব্যবহৃত ট্রাংক ও জিনিসপত্র দেখে ধারণা করেন ট্রাংকের মধ্যে অনেক টাকাপয়সা আছে।

আইয়ুব আলী ওই টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করে। ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে রওশনারার বাড়িতে আসে। রাতে খাওয়াদাওয়া শেষ করে রওশনারার ঘরে শুয়ে পড়েন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি গভীর রাতে উঠে ট্রাংকের তালা খুলে ট্রাংক থেকে টাকা বের করার চেষ্টা করেন। ওই সময় শব্দে রওশনারার ঘুম ভেঙে যায়। তখন আসামি আইয়ুব আলী মসলা বাটার পাথরের শিল দিয়ে রওশনারার মাথায় আঘাত করলে রওশনারা অজ্ঞান হয়ে যান। ওই অবস্থায় তাকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

এরপর তিন বছর বয়সী ছেলে মাহিন জেগে উঠে কান্নাকাটি করলে তাকেও গলা টিপে হত্যা করেন। এছাড়া রওশনারার অপর ছেলে জিহাদের ঘুম ভেঙে গেলে আইয়ুব আলী তাকেও গলা টিপে হত্যা করেন। মরদেহ ঘরের মধ্যে ফেলে রেখে দরজা বাইর থেকে শিকল আটকিয়ে চলে যান। ওই বাড়িতে আর কোনো লোকজন ছিল না।

পর পর দুই দিন তাঁত ফ্যাক্টরিতে না যাওয়ায় ওই ফ্যাক্টরির মালিক কুদ্দুস রওশনারার খোঁজ নিতে থাকেন। রওশনারার বোন লিলি খাতুনের কাছে জানতে চান। লিলি খাতুন রওশনারার বাড়িতে এসে ঘরের শিকল খুলে ঘরের ভেতরে ঢুকে দেখতে পান রওশনারা ও তার দুই ছেলের মরদেহ ঘরের মেঝেতে অর্ধগলিত অবস্থায় পড়ে আছে।

খবর পেয়ে পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় রওশনারার ভাই নুরজ্জামান বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আইয়ুব আলী সাগরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। হত্যার দায় স্বীকার করে আইয়ুব আলী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণের জন্য মোট ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত মামলার একমাত্র আসামি আইয়ুব আলী সাগরকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!