• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

বন্ধুকে স্ত্রীর প্রেমিক হত্যার গল্প শুনিয়ে ফেঁসে গেলেন যুবক


নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৪, ০৫:৫০ পিএম
বন্ধুকে স্ত্রীর প্রেমিক হত্যার গল্প শুনিয়ে ফেঁসে গেলেন যুবক

নাটোরের গুরুদাসপুরে স্ত্রীর প্রেমিককে হত্যার পর লাশ গুমের গল্প বন্ধুকে শুনিয়ে ফেঁসে গিয়েছেন মো. আল হাবিব সরকার (২৫) নামে এক যুবক। র‌্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সঞ্জয় কুমার সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন।

র‌্যাব জানায়, স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন আল হাবিব সরকার। সেখানে বসে আল হাবিবের সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয় খলিফাপাড়ার মো. জাকির মুন্সির। বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক মফিজুল ইসলামকে হত্যা ও লাশ গুমের কথা বলে দেন হাবিব।

সম্প্রতি জাকির মুন্সি জামিনে বের হয়ে মফিজুলকে হত্যা ও লাশ গুমের কথা তার মাসহ অন্যদের বলে দেন। পরে মফিজুলের মা মাইনুর বেগম গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

গুরুদাসপুর-সিংড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, নিহতের মা মাইনুর বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা ও গুমের মামলা করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।

আক্তারুজ্জামান আরও জানান, শনিবার (২ মার্চ) উপজেলার চাঁচকৈড় পুরান পাড়ার আবু তাহের খলিফা ওরফে তারা খলিফা (৫৫), তার মেয়ে তানজিলা আক্তার (২০) এবং তানজিলার মামাত ভাই আশরাফুল ইসলামকে (৪৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ছাড়া স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন মামলায় মো. আল হাবিব সরকারের জামিন হলেও মফিজুল ইসলামকে হত্যা মামলায় আবার তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

নিহত মফিজুল ইসলাম গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় খলিফাপাড়া এলাকার মো. আজাত মোল্লা ও মোছা. মাইনুর বেগম দম্পতির ছেলে। পেশায় বেকারি শ্রমিক ছিলেন তিনি।

র‌্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, আশরাফুলকে শনিবার সকালে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার গোলচত্বর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে বাড়ি থেকে তানজিলা ও তার বাবা তারা খলিফাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানায়, হত্যার পর মফিজুলের মরদেহ গুরুদাসপুরের পুরানপাড়া মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাংকের পাশে মাটিচাপা দেওয়া হয়।

সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, তানজিলা ও মফিজুল চাঁচকৈড় খলিফাপাড়ায় একটি বিস্কুটের কারখানায় কাজ করতেন। সেসময় তারা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সম্পর্কের বিষয়টি তানজিলার বাবা তারা খলিফা জানতে পেরে মোবাইল ফোনে মফিজুলকে খুনের হুমকি দেন।

তিনি বলেন, ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তানজিলাকে দিয়ে মোবাইল ফোনে ডেকে এনে মফিজুলকে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে বেঁধে ফেলা হয়।

এরপর মফিজুলকে মাটিতে ফেলে আসামিরা তার বুকে শাবল দিয়ে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মফিজুল। পরে মরদেহ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাংকের পাশে মাটিতে পুঁতে রাখে।

সঞ্জয় কুমার জানান, এরই মধ্যে তানজিলা ও আল হাবিব সরকারের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। একপর্যায়ে তানজিলা তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ আল হাবিবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। কারাগারে গিয়ে আল হাবিবের সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয় খলিফাপাড়ার মো. জাকির মুন্সীর সঙ্গে।

Link copied!