• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

কুড়িগ্রামের ১৬ নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৩, ০৪:২২ পিএম
কুড়িগ্রামের ১৬ নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

কুড়িগ্রামে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, কালজানী ও দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বেড়েছে। পানি বৃদ্ধির ফল তীরবর্তীর চরাঞ্চলগুলোর অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পরিবারগুলো পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে এসব অঞ্চলের আবাদি ফসলি ও সবজি ক্ষেত। অনেকে নিজেদের গবাদি পশুকে নিয়ে যাচ্ছেন উঁচু জায়গায়।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার সবগুলো নদীর পানি বেড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র চিলমারীপয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার, ধরলা সদর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলার ৪২১টি চর-দ্বীপচরের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চলে পানি ওঠার কারণে বাড়ি-ঘর থেকে প্রয়োজন ছাড়া বের হতে পারছেন না সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের দুই শতাধিক পরিবার এবং নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়ন ও ভুরুঙ্গামারীর আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার।

যাত্রাপুরের পোড়ার চরের বাসিন্দা শাহিনা বেগম বলেন, “গতকাল সকাল থাকি পানি বাড়ছে। ঘরের উঠোনত হাঁটু পানি জমছে। ঘরের ছাগলগুলারে সকালে উঁচু জায়গায় নিয়ে বান্দি রাখছি। হামার কষ্টের দিন শুরু হইল।”

রায়গঞ্জের বাসিন্দা মামুনুর রশিদ বলেন, “আমাদের গ্রামে গতকাল থেকেই পানি ঢোকা শুরু করেছে। এখানকার চরের প্রায় ৫০টির মতো বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে।”

রায়গঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আরিফুজ্জামান বলেন, “আমার এলাকার শতাধিক বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এসব জায়গার শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছে। সকালে উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি।”

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের প্রায় দুইশ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দুই-তিনদিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।‍‍`

অন্যদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এসব অঞ্চলে নদী ভাঙন। ধরলার সারডোবে পাড় ভাঙছে, গঙ্গাধর বল্লভেরখাস ইউনিয়নে মাঝিপাড়ায় ৫টি পরিবার, তিস্তার রাজারহাট সরিষাবাড়িতে ২টি পরিবার, চিলমারীর নয়ারহাটে একটি স্কুল, রাজীবপুরে ১৫টি পরিবার ভাঙনের কবলে পড়েছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনও নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করা পর্যন্ত বড় ধরণের বন্যার সম্ভাবনা নেই।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ জানান, পানি বিপৎসীমার নিচে থাকায় জেলায় এখনো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। বন্যা মোকাবেলায় উদ্ধারের জন্য ৪টি নৌকা এবং আশ্রয়কেন্দ্র ও পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী প্রস্তুত আছে।

Link copied!