• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

বাবার মরদেহ মর্গে রেখে পরীক্ষা দিল মেয়ে


বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৩, ০৯:৩৯ পিএম
বাবার মরদেহ মর্গে রেখে পরীক্ষা দিল মেয়ে

রাতে চোখের সামনে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। সকালে বাবার মরদেহ বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে রেখে এসএসসি পরিক্ষায় বসেন স্কুলছাত্রী।

বরগুনা সদরের আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের ঘটনা এটি। ওই স্কুল ছাত্রীর নাম সানজিদা ইসলাম রিয়া। সে ওই ইউনিয়নের পাকুরগাছিয়া ঠান্ডারক্লাব এলাকার নিহত শফিকুল ইসলাম পনুর মেয়ে। রিয়া এবার সদরের কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের জর্জিয়া কিন্ডারগার্টেন থেকে এসএসসি পরিক্ষা দিচ্ছেন।

রিয়ার পরিক্ষা কেন্দ্র সদরের কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের আয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জুয়েল বলেন, “সানজিদা আমাদের কেওড়াবুনিয়ার জর্জিয়া কিন্ডারগার্টেন থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ইতোমেধ্য দুটি পরীক্ষা দিয়েছে। এর মধ্যে তার বাবা দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়ে নিহত হন। কিন্ত মেয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বুধবার বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে বাবার মরদেহ দেখে এরপর পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছে মেয়ে সানজিদা। আমরা তাকে সার্বিক সহযোগীতা করেছি।”  

পরীক্ষা শেষে সানজিদা ইসলাম রিয়া বলেন, “বাবার মরদেহ মর্গে দেখে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার চেয়ে কষ্টের আর কিছুই নেই। বাবার স্বপ্ন ছিল আমি লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হব। বাবাকে তো আর ফিরে পাবো না, পরীক্ষাটা না দিলে বাবার স্বপ্ন ভেঙে যেত। তাই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।“

নিহত শফিকুল ইসলাম পনুর স্ত্রী ও পরীক্ষার্থী সানজিদার মা ছবি আক্তার বলেন, “বুধবার রাতে ঠান্ডাবাহিনীর ২০ থেকে ২৫ জন লোক আমার স্বামীকে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি আমার স্বামীকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও ওরা মারধর করে। আমার মেয়ে সানজিদাকে তার বাবার লাশ মর্গে রেখে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি আর কি হতে পারে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

আয়লা পতাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুদ্দিন শানু বলেন, “আমাদের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম পনুকে ইউপি নির্বাচনের দ্বন্দ্বে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার প্রতিপক্ষ বর্তমান ইউপি সদস্য মোতাহার মৃধা তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে। এর আগেও তারা পনুর ওপর হামলা চালিয়েছিল। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম বলেন, “খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম ঘটনাস্থলে যাই। আহতদের উদ্ধার করে করে হাসপাতালে পাঠাই। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অভিযান চলছে।”

Link copied!