• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

যমুনার চরে সবজি চাষে স্বাবলম্বী কৃষক


হাসান সিকদার, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৩, ০৪:১০ পিএম
যমুনার চরে সবজি চাষে স্বাবলম্বী কৃষক

চলতি বছরে শুকনো মৌসুমে যমুনার চরে মুলাসহ বিভিন্ন ধরণের শীতকালীন সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন টাঙ্গাইলের কৃষকরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ায় জেলার ভূঞাপুরে ছোট-বড় অসংখ্য পলি মাটিযুক্ত বালুচর জেগে ওঠে। এতে ভাগ্য খোলে চরাঞ্চল ও আশপাশের কৃষকদের। তারা জেগে ওঠা চরে মুলাসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করে ভালো ফলন পান। সেগুলো স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছেন।  

কৃষকরা জানান, চরে উৎপাদিত সবজি ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী, পাথাইলকান্দি, কুঠিবয়ড়া বাজার, নলিন বাজারে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাইকারি দরে বিক্রি করেন। প্রতিদিন এসব হাটে লাখ টাকার ওপরে সবজি বেচা-কেনা হয়। জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে পাইকারি দরে সবজি কিনতে আসেন অনেক ব্যবসায়ী।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক জেলা মহাসড়কের উপজেলার অর্জুনা ও গাবসারা চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত মুলা নৌকায় করে নলিন বাজারে ও কুঠিবয়ড়া বাজারে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে আশপাশের বিভিন্ন পাইকাররা কম মূল্যে সবজি কিনে নেন।

গাবসারা ইউনিয়নের বাসুদেবকোল গ্রামের কৃষক নূর আলম বলেন, “গতবারের চেয়ে নদীতে এবার অনেক চর জেগেছে। মাসখানেক আগে আমার জমি জেগে ওঠে। সেখানে মুলার বীজ রোপণ করেছিলাম। কোনো ধরণের কীটনাশক ছাড়াই মুলা চাষ ভাল হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় হাটে নিয়েও বিক্রি করতে হচ্ছে না। পাইকাররা বাড়িতে এসে মুলা কিনে নিচ্ছেন।”

আরেক কৃষক রতন আলী বলেন, “ভোরে চর থেকে ৫০০ আঁটি মুলা উঠিয়ে নলিন বাজারে এনেছিলাম। ভূঞাপুর কাঁচা বাজারের এক সবজি বিক্রেতা ১ হাজার ২০০ টাকা দরে কিনে নিয়েছেন। ৬ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। আমি একা নই, আমার মতো অসংখ্য কৃষক ননিল বাজারে সকালে পাইকারি দরে মুলা বিক্রি করে থাকেন। প্রথম অবস্থায় ভালো দামে বিক্রি করতে পারছি।”

জগৎপুরা গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “যমুনার নলিন ঘাটের বাজারটি ঐতিবাহী একটি হাট। প্রতিবছর শুকনো মৌসুমে এই দিনে চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন শাকসবজি পাইকারি দরে বিক্রি করেন। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত লাখ টাকার বেশি বেচা-কেনা হয়। অনেক দূর-দূরান্তের ব্যবসায়ীরা এখান থেকে মুলাসহ বিভিন্ন সবজি কেনেন। ননিল বাজারে দ্রুত সময়ে সবজির আড়ৎ গড়ে উঠবে।”

ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, “যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে চরাঞ্চলের কৃষকদের নিয়ে সবজি চাষাবাদে উদ্বুদ্ধকরণ করা হয়। সেই কারণে এবার মুলার ফলন হয়েছে বেশি। অল্প সময়ে কম পুঁজিতে বেশি লাভ হয় বলে চাষিরা মুলা চাষে ঝুঁকছেন। কৃষকরা এবার ভালো দামও পেয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য শাকসবজি চাষাবাদের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। উপজেলা কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে।”

Link copied!