• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

তরুণীকে অপহরণ, এক মাস পর উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা


খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৪, ০৮:১০ এএম
তরুণীকে অপহরণ, এক মাস পর উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা
ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদসহ সাতজনের বিরুদ্ধে এবার ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা করেছেন সেই তরুণীর (২৬) খালাতো ভাই। এর আগে হাসপাতালের সামনে থেকে মাসহ ওই তরুণীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। তবে পরদিন উল্টো কথা বলেন সেই তরুণী।

বুধবার (৬ মার্চ) তরুণীর খালাতো ভাই গোলাম রসুল বাদী হয়ে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–১–এ মামলাটি করেন। এতে অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় চিকিৎসক–সাংবাদিকসহ ছয়জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

এজাহারনামীয় অন্য আসামিরা হলেন ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামান, গাজী আব্দুল হক, আলামীন গাজী, আক্তারুল আলম সুমন, সাদ্দম গাজী ও মো. ইমরান হোসেন।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় কো–অর্ডিনেটর আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম আদালতে মামলা করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বাদীপক্ষের আইনজীবী।

এর আগে, ২৮ জানুয়ারি ওই তরুণীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে ঘটনাস্থল থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা গাজী এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই।

তবে পরদিনই ওই তরুণী সাংবাদিকদের জানান, তাকে ধর্ষণ বা অপহরণের ঘটনা ঘটেনি। তাঁর পরিবারও কোনো মামলা করবে না বলে পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে বাড়ি ফিরেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি রাতে ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গাজী এজাজ আহমেদ শাহপুর বাজারের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার পরদিন রাতেই ভিকটিম খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হন।

এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য তিনি গত ২৮ জানুয়ারি বিকেলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসির সামনে গিয়ে জানতে পারেন, ওসিসি কর্তৃপক্ষ উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ ও ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভুক্তভোগীকে যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে ছাড়পত্র প্রদান করার উদ্যোগ নিয়েছে।

এ সময় ভুক্তভোগী ও তার মা ওসিসি থেকে বের হওয়ামাত্র ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে এজাহারভুক্ত আসামিরা ১০/১৫ জন তাঁদের টেনে–হিঁচড়ে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মোটরসাইকেলসহ গাজী তৌহিদুজ্জামানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

পরে গভীর রাতে অজ্ঞাতনামা ২–৩ জন ভুক্তভোগী ও তার মাকে খুন–জখম করার হুমকি দিয়ে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় নিয়ে ভুক্তভোগীকে দিয়ে পুলিশের কাছে মিথ্যা বক্তব্য দিতে বাধ্য করে। পরে পুলিশকে ম্যানেজ করে গাজী তৌহিদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ ও ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদ ভুক্তভোগীকে ডুমুরিয়া থানা এলাকার অজ্ঞাত একটি স্থানে আটকে রাখেন।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, বাদী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি। পক্ষান্তরে আসামিরা অনেক অর্থ ও পেশিশক্তির অধিকারী, নারী নির্যাতনকারী, ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারকারী, আইন অমান্যকারী। তারা ভুক্তভোগীকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরপরও বাদী, ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে থানা–পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে ট্রাইব্যুনালে এসে মামলা করতে বিলম্ব হয়।

ঘটনার দিন ছাড়াও ভুক্তভোগীকে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী।

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!