• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পাঁচ সাংবাদিককে অফিসে আটকে জেলে পাঠানোর হুমকি এসিল্যান্ডের


লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
পাঁচ সাংবাদিককে অফিসে আটকে জেলে পাঠানোর হুমকি এসিল্যান্ডের
লালমনিরহাট সদর ভূমি কমিশনারের কার্যালয়। ছবি : প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে শুনানির ভিডিও ধারণ করায় পাঁচ সাংবাদিককে অফিসে আটকে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকার। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টিএমএ মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অফিস গেটের তালা খুলে সাংবাদিকদের মুক্ত করেন। 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে এসিল্যান্ড সাংবাদিকদের ‘দালাল’ বলে অপমান করতে থাকেন। এ সময় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নিলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের সাথে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি। কিছুক্ষণ পরেই পেছনে থাকা একটি টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সনের মোটরসাইকেল আটকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিক্ষুদ্ধ এসি ল্যান্ড আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকার।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা হলেন মাইটিভির মাহফুজ সাজু, এশিয়ান টিভির লিয়ন দুলাল, কালবেলার এসকে সাহেদ, সময়ের কণ্ঠস্বরের কাউসার মাহমুদ ও ভোরের চেতনার জেলা প্রতিনিধি ফারুক আহমেদ সূর্য।

এ ঘটনার পর সাংবাদিকরা শহরের মিশনমোড়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। দুপুর ২টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টিএমএ মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন । অভিযুক্ত সহকারী কমিশনারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা অবস্থান ধর্মঘট তুলে নেন।

সাংবাদিকরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সহকারী কমিশনারের (এসি ল্যান্ড) অফিসের তিনজন অফিস সহকারী ভূমি সংক্রান্ত শুনানি করছিলেন। সেখানে এসি ল্যান্ড উপস্থিত ছিলেন না। মাই টিভি ও ডেইলি অবজারভার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মাহফুজ সাজু এ শুনানির ভিডিও ধারণ করেন। এতে অফিসের স্টাফরা ক্ষুদ্ধ হয়ে এসি ল্যান্ডকে ডেকে আনেন। এসি ল্যান্ড আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকারের নির্দেশে সাংবাদিক মাহফজু সাজুকে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে প্রেসক্লাব থেকে চার সাংবাদিক নিয়ন দুলাল, এসকে সাহেদ, ফারুক আহমেদ ও কাওছার আহমেদ ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও অফিসে আটকে রাখা হয়।

সাংবাদিক মাহফুজ সাজু বলেন, “এসি ল্যান্ড আমাকে অফিসে আটকালে সহকর্মীদের ফোন দিলে তারা ঘটনাস্থলে আসেন। এসি ল্যান্ড তাদেরও অফিসে আটকে রাখেন। এসি ল্যান্ড সাংবাদিকদের সম্পর্কে খুবই অপ্রীতিকর মন্তব্য করেছেন। আমাদের জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন।”

সাংবাদিক এসকে সাহেদ জানান, “এসিল্যান্ড আমাদের সাথে খুবই রূঢ় আচরণ করেন। সাংবাদিকদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। সেবা নিতে আসা মানুষজনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার তথ্য সংগ্রহ করায় তিনি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুদ্ধ হন।”

লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক ও এটিএন বাংলার জেলা প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন জানান, জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। শনিবারের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সাংবাদিকরা আন্দোলনে যাবেন।

সাংবাদিকদের আটকে গালিগালাজ ও জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকার কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, “কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছি।”

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, “পুরো বিষয়টি অবগত হয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Link copied!