• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝাঁজ কমেনি পেঁয়াজের, মসলার বাজারও চড়া


দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৩, ০২:১৮ পিএম
ঝাঁজ কমেনি পেঁয়াজের, মসলার বাজারও চড়া

উত্তরের জেলা দিনাজপুরে কোনোভাবেই কমছে না পেঁয়াজের দাম। সরকার কর্তৃক পেঁয়াজ আমদানির খবরে দাম কিছুটা কমলেও সেটি আবার ১২ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে জেলার নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।

মঙ্গলবার (২৩ মে) জেলা শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা যায়, প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। এর আগে গত রোববার (২১ মে) সরকারের আমদানির খবরে পেঁয়াজের দাম কমে বিক্রি হয়েছিল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা দরে। তার আগে গত শুক্রবার (১৯ মে) পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। পেঁয়াজের দামের এমন ওঠা-নামা নিয়ে শঙ্কিত সাধারণ ক্রেতারা।

বাজার করতে আসা রফিকুল বলেন, “বাজারে প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। কিন্তু আমাদের বেতন তো বাড়ে নাই। হাঁস-ফাঁস হয়ে উঠছি ভাই। গত কয়েকদিন আগে পেঁয়াজ কিনলাম ৮০ টাকা কেজি। যদিও বাজারটা কমল। এখন আবার বেড়ে গেছে।”

শুধু পেঁয়াজ নয় গত ৫ দিনের ব্যবধানে আদার দামও বেড়েছে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ৫ দিন আগে জেলার বাহাদুর বাজারে আদা খুচরা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং পাইকারী ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে। ৫ দিনের ব্যবধানে বাজারে আদার দাম বেড়ে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা এবং পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা পর্যন্ত। এদিকে রসুন এক সপ্তাহ আগে খুচরা বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং পাইকারী ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। ৫ দিন পরে সেই রসুনের বাজার দর কিছুটা কমে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা এবং পাইকারী ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।

অপরদিকে রমজান পরবর্তী মসলার বাজারের উত্তাপ কমেনি গত এক মাসেও। বাজার ঘুরে জানা গেছে, বর্তমানে জিড়া বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৭৭০ টাকা। একইভাবে প্রতি কেজি ধনিয়া ১৯০ থেকে ২০০, লবঙ্গ ১৪৫০ থেকে ১৪৮০, বড় এলাচ ১০৪০ থেকে ১০৫০, ছোট এলাচ ১৫৯০ থেকে ১৬০০, পাঁচফোড়ন ২৪০ থেকে ২৫০ এবং জোয়ান বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা দরে।

গত এক মাস আগে এই বাজারে জিড়া বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬৬০ থেকে ৬৬৫ টাকা দরে। একইভাবে প্রতি কেজি ধনিয়া ১২০ থেকে ১২৫ টাকা, লবঙ্গ ১৪০০ থেকে ১৪৪০, বড় এলাচ ৯৯০ থেকে ৯৮০ এবং ছোট এলাচ ১৫১০ থেকে ১৫২০ টাকা দরে। আর পাঁচফোড়ন, জোয়ানের দাম অপরিবর্তিতই রয়েছে।  

এদিকে পেঁয়াজের আমদানির খবরে জেলার হিলি স্থল বন্দরেও কমেছিল পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে হিলি স্থলবন্দর সংলগ্ন বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৮ থেকে ৮০ টাকা দরে। গত এক সপ্তাহ আগে সেখানে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা দরে।

মোহাম্মদ আলামিন ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, “বাজারের এমন পরিস্থিতি, সংসার চালানো কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। কোরবানির বাকি আর এক মাস, এখনও মসলার বাজার চড়া। পেঁয়াজের দাম এই কমছে, এই বাড়ছে। কোনো জিনিসের দাম তো কমে না। আর বেতনও বাড়ে না। এভাবে চলা যায় না। কোরবানি আগে যেন বাজারটা নিয়ন্ত্রণ হয়।”

এদিকে বাজার ক্রেতা শূণ্য জানিয়ে আবু হানিফার নামের এক মসলা বিক্রেতা বলেন, “রমজানের সময় মসলার দাম বাড়ছে। পরে আর কমেনি। ঈদের এক মাস হইল। আবার এক মাস পরে কোরবানির ঈদ। আমাদের দেশ মসলা আমদানি নির্ভর। যোগান আছে কিন্তু দাম বেশি। আর বাজারে ক্রেতাও নাই। এভাবে চলতে থাকলে সকলেই ঋণে পড়বে। দোকান চালাতে হবে না আর মানুষকে। বাজারটা যে কবে নিয়ন্ত্রন হবে আল্লাহ্ জানেন।”

মাজিদুর নামের এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বলেন, “সরকার এলসি করলে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। তবে সপ্তাহ খানেক আগে কমেছিল। আবার একটু বাড়ছে।”

হিলি স্থল বন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, “হিলি স্থল বন্দরে বর্তমানে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ। এখানে একটি ছোট বাজার রয়েছে। এখানে আমদানি না হলে বাজার জানা একটু মুশকিল। তবে আমদানি না হলে পাবনা থেকে বিক্রেতারা কিনে এনে বিক্রি করে। বর্তমানে এই বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে।“

জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম বলেন, “নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি কোনো সিদ্ধান্ত দেয়, আমরা সেই নিয়ামানুসারে কার্যক্রম পরিচালনা করব।”

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!