সারা দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। একদিকে তীব্র গরম, অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিং। সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নওগাঁর জনজীবন।
মঙ্গলবার (৬ জুন) জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ ও ভ্যাপসা গরম যেন কিছুতেই কমছে না। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। ফলে নাজুক হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক কাজকর্ম।
বাইরে প্রচণ্ড গরম, আর ঘরে লোডশেডিংয়ের কারণে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ। তবে জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিনিয়তই বাইরে যেতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের।
বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গরমের তীব্রতা না কমলে লোডশেডিং পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে।
নিয়ামতপুর উপজেলার আলমঙ্গীর হোসেন বলেন, “তীব্র রোদের কারণে ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। আমাদের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে কাজ করতে হয়। কিন্তু রোদের কারণে স্বাভাবিক চলাফেরা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
মান্দা উপজেলার ফেরীঘাটের চা দোকানদার আবুল কালাম বলেন, “তীব্র গরমের কারণে বেচা-কেনা একেবারেই কমে গেছে। সামনে ঈদ কী করবো বুঝতে পারছি না।”
খাস নওগাঁর বাসিন্দা মোতালেব বলেন, “গরমের কারণে মানুষের অবস্থা খারাপ। বিশেষ করে দিনমজুর শ্রেণির মানুষগুলো তীব্র রোদের মধ্যে অনেক কষ্ট পাচ্ছে।”
পৌর এলাকার রিকশা চালক জাহিদ বলেন, “রোদের মধ্যে মানুষজন বের হচ্ছে অনেক কম। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৩২০ টাকা ভাড়া পেয়েছি। এর মধ্যে রিকশার মহাজনকে ১৪০ টাকা দিতে হবে। জিনিসের দাম এত বেড়েছে এই টাকা দিয়ে কী কিনবো মাথায় কাজ করছে না।”
জেলার জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১০-১২ দিনে প্রায় পাঁচ শতাধিক বয়স্ক ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া, শিশুদের নিউমোনিয়াসহ গরমজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা মৌমিতা জলিল বলেন, “প্রতিদিনই শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ও অন্যান্য ওয়ার্ডের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বেশি রোগী ভর্তি আছে।”