ফরিদপুরের ভাঙ্গার তুজারপুরের চাড়ালদিয়া বিল থেকে অর্ধগলিত এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের পর মূল আসামি গ্রেপ্তারে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব। দুই বন্ধুর সমকামিতার সম্পর্ক থেকে বন্ধু রেদোয়ানকে হত্যা করে বিলের পানিতে লাশ গুম করে রাখে অপর বন্ধু জহুরুল। নিখোঁজের চার দিনের মাথায় বিলের ভেতর থেকে লাশ উদ্ধারের পর ঘাতক জহুরুলকে আটক করে র্যাব-১০-এর সদস্যরা।
নিহত কলেজছাত্র শেখ রেদোয়ান (২৫) জেলার সদরপুর উপজেলার ২২ রশি গ্রামের প্রবাসী শেখ আবু বক্কার সোহেলের ছেলে। তিনি গাজীপুরের একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিল।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১০-এর কেরানীগঞ্জের অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৩ আগস্ট বিকেলে বন্ধু জহুরুলের ফোন পেয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে সদরপুর থেকে পাশের ভাঙ্গা উপজেলার চাড়ালদিয়া গ্রামে এসে নিখোঁজ হন। নিখোঁজ ঘটনায় ১৪ আগস্ট রেদোয়ানের মা রাবেয়া বেগম সদরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এদিকে র্যাব সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজের চার দিন পর রেদোয়ানের গলা, হাত-পা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপানো অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানা-পুলিশ। র্যাব-১০ একটি দল তথ্ প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে রেদোয়ান হত্যার মূল আসামি জহুরুলকে রোববার রাতে ভাঙ্গা থেকে আটক করা হয়। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত চাকু ও বন্ধুর খোয়া যাওয়া মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে তারা। আসামি জহুরুল মুন্সী ওরফে সুলতান জহির ভাঙ্গা উপজেলার চাড়ালদিয়া গ্রামের লুকমান মুন্সীর ছেলে।
জহুরুল স্বীকার করেছেন যে সমকামিতার ঘটনা নিয়ে দুজনের কথা-কাটাকাটি একপর্যায়ে রেদোয়ানের গলায় হঠাৎ চাকুর পোস লাগে। পরে রাতে তাকে বাড়ির পাশে পুকুরে মধ্যে ডুবিয়ে রাখে। দুই দিন পর যখন রেদোয়ানের লাশ ভেসে উঠে তখন তাকে বালুর বস্তা, ইটের বস্তা দিয়ে বেঁধে নৌকা নিয়ে বিলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখে এবং যাতে ভেসে না ওঠে এ জন্য আবার চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত করে।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, গত ১৩ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে রেদোয়ান মোটরসাইকেল নিয়ে সদরপুরের নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। রোববার দুপুরে ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের চাড়ালদিয়া বিলের মধ্যে একজন অজ্ঞাত পুরুষের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশটি রেদোয়ানের বলে নিশ্চিত করে তার পরিবার।