• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

৫০ শতাংশ ছাড়েও পর্যটকশূন্য বান্দরবান


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২৩, ১০:০১ এএম
৫০ শতাংশ ছাড়েও পর্যটকশূন্য বান্দরবান

ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা বান্দরবান। এবার সেখানেই ঈদের ছুটিতে পর্যটকেরা তেমন একটা যাচ্ছেন না। সাজিয়ে রাখা হোটেল-মোটেলগুলো অনেকটাই পর্যটকশূন্য হয়ে আছে।

ঈদুল আজহার টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে পর্যটক আকর্ষণের জন্য ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় চলছে জেলার সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসগুলোতে। এরপরও খালি জেলার সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস। নেই আগাম কোনো বুকিংও। তাই হতাশ হোটেল মালিকসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে পর্যটন নগরী বান্দরবান পাহাড় প্রেমীদের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠলেও এ বছর সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। সময় সংবাদের প্রতিবেদন, পাহাড়ে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের কারণে ২০২২ সালের অক্টোবর মাস থেকে জেলার রুমা রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন। এরপর থেকে থমকে যায় জেলার পর্যটন শিল্প।

একটি রিসোর্টের পরিচালক ইমরান উদ্দিন বলেন, পাহাড়ের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য দীর্ঘ দিন ধরে বান্দরবানে পর্যটকের আগমন ঘটছে না। ভেবেছিলাম ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটক আসবে সে হিসেবে ছাড়ও দিয়েছি। কিন্তু কোনো বুকিং পাচ্ছি না রুমও খালি। স্টাফদের বেতন মেইনটেনেন্স খরচ-সব মিলিয়ে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। শুধু হোটেল ব্যবসায়ীরাই নয়, পর্যটক না আসায় বিপাকে পড়েছে পরিবহন শ্রমিক, টুরিস্ট গাইড, রেস্টুরেন্ট মালিকসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার শ্রমিক।

হোটেল গ্র্যান্ড ভ্যালির ব্যবস্থাপক ইসমাইল সুমন বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে পর্যটক না আসায় আমাদের হোটেল খালি যাচ্ছে। তাই ভেবেছিলাম ঈদের টানা ছুটিতে বুকিং পাবো, পর্যটক আসবে সে উপলক্ষে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও কোনো বুকিং নেই পর্যটক না আসায় হোটেলও খালি। এ অবস্থা চলতে থাকলে স্টাফদের খরচ চালাতেও কষ্ট হয়ে যাবে।

হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের হিসাব অনুযায়ী, বান্দরবানে হোটেল-মোটেলগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী কমপক্ষে দুই হাজার, ভাড়ায়চালিত চার শতাধিক চাঁন্দের গাড়ি, জিপসহ বিভিন্ন যানবাহন এক হাজার (মালিক-শ্রমিক), নৌকাচালক, ট্যুর গাইড ও খাবারের দোকান কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় চার হাজার মানুষ সরাসরি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

পর্যটকদের বান্দরবানমুখী না হওয়ার পেছনে ভুল প্রচারণাকে দায়ী করেছেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় নিরাপত্তাজনিত কারণে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত ভুলভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। বাস্তবে এই তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বাকি চারটি উপজেলা নিরাপদ। অথচ ভুল প্রচারণার কারণে ভ্রমণকারীদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার ধারণা সৃষ্টি হয়েছে।

বান্দরবান পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, “বান্দরবানের তিনটি উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চারটি উপজেলায় পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারবে। তারা যাতে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারে সেজন্য সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি পর্যটন স্পটে থাকবে টুরিস্ট পুলিশ সাদা পোশাকধারী পুলিশসহ নিয়মিত টহল দল। পর্যটকরা এখানে নিরাপদে ঘুরে বেড়াতে পারবে।”

Link copied!