সকালের সূর্য দেখে বলে দেওয়া যায় দিনটি কেমন হবে। ক্রিকেটে ঠিক তেমনি প্রথম পাওয়ার প্লে দেখে বলে দেওয়া যায় ম্যাচটি কেমন হবে। ফিল্ডিং অথবা ব্যাটিং কারা এগিয়ে সেটা প্রথম পাওয়ার প্লে দেখে চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়। প্রথম পাওয়ার প্লেটা ফিল্ডিং কিংবা ব্যাটিং দুই দলের জন্যই সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বোলাররা নতুন বলের শাইনিংকে কাজে লাগিয়ে বাড়তি সুইং ও বাউন্স দিয়ে ব্যাটারদের ঘায়েল করে থাকেন।
অন্যদিকে ব্যাটারা সুবিধা পেয়ে থাকেন ম্যাচের প্রথম ১০ ওভারে ৩০ গজের বাইরে মাত্র দুইজন ফিল্ডার থাকায় দ্রুত রান তুলে নেন। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে প্রথম পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের ব্যাটাররা বাকি দলগুলোর থেকে পিছিয়ে। ভারত বিশ্বকাপে প্রথম পাওয়ার প্লেতে সবচেয়ে বেশি উইকেট হারিয়েছে টাইগাররা।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত একমাত্র সফলতা আফগানিস্তানকে প্রথম ম্যাচ হারাতে পারা। এছাড়া পুরো বিশ্বকাপে ব্যর্থতার গল্প দিয়ে ভরা। যে ব্যর্থতার গল্প লিখতে বসলে হয়ত বা সূর্য পূব দিকে উদিত হয়ে পশ্চিমে অস্তমিত হয়ে যাবে তবুও ভারত বিশ্বকাপের ব্যর্থতার গল্প লিখে শেষ করা যাবে না বাংলাদেশের। টাইগারদের এমন ব্যর্থতার মূল চরিত্রে রয়েছে ব্যাটাররা। আর এই ব্যর্থতা শুরু হয় টপ-অর্ডারদের ব্যর্থতা দিয়ে।
চলমান বিশ্বকাপের একটা পরিসংখ্যান বাংলাদেশের টপ অর্ডারদের ব্যর্থতার চিত্রটা আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে প্রথম দশ ওভারের মধ্যে তারা উইকেট হারিয়েছে ১৬টি। অর্থাৎ ম্যাচপ্রতি ২.২৯টি। আসরে প্রথম পাওয়ার প্লেতে আর কোনো দল এর চেয়ে বেশি উইকেট হারায়নি।
বাংলাদেশের পরেই আছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ইংলিশরাও বাংলাদেশের সমান ম্যাচ খেলে প্রথম পাওয়ার প্লেতে উইকেট হারিয়েছে ১৫টি। গড়ে ম্যাচপ্রতি ২.১৪টি। তিনে থাকা শ্রীলঙ্কা হারিয়েছে ১৪টি, নেদারল্যান্ডস ১২টি। প্রথম পাওয়ার প্লেতে ১০টির বেশি উইকেট হারানো দল এই চারটিই। পয়েন্ট তালিকার দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে, এরাই তলানির চার দল।
প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৯টি করে উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান। এই চার দলের পর এবারের বিশ্বকাপে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা ভারত প্রথম ১০ ওভারে উইকেট খুইয়েছে ৮টি। এখন পর্যন্ত প্রথম পাওয়ার প্লেতে সবচেয়ে সফল তম দল আফগানিস্তান। তারা নিজেদের ৭ ম্যাচে প্রথম ১০ ওভারে উইকেট হারিয়েছে ৬টি।