এশিয়া কাপ শুরুর আগে শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে আলোচনায় ছিল না কোন। এক তো ইনজুরিতে জর্জরিত ছিল দলটি, ফলে জোড়াতালি দিয়ে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের জন্য দল ঘোষণা করে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। সেই জোড়াতালি দেওয়া দলটি আজ ফাইনালে। অঘোষিত সেমিফাইনালে তারা হারিয়েছে আসরের ফেভারিট পাকিস্তানকে। আর এশিয়া কাপ থেকে পাকিস্তানের এমন বিদায় মেনে নিতে পারেনি দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং সাক্ষাৎকারে নিজেদের দলকে নিয়ে সমালোচনা করেছেন শহীদ আফ্রিদি, রমিজ রাজা এবং শোয়েব আখতার।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শোয়েব বলেন, “এই হার খুবই লজ্জাজনক। পাকিস্তানের মতো ফেবারিট টিমের এভাবে টুর্নামেন্টের বাইরে চলে যাওয়া মোটেই ভালো দেখায় না। পাকিস্তানের পেস আক্রমণ, মিডল অর্ডার, স্পিন বিভাগ, ওপেনাররা ভালো না করা, ফখর জামানের ছন্দে না থাকা, এগুলো সবই আমার দেখতে খুবই বিদঘুটে লেগেছে।”
তবে বিশ্বকাপ নিয়ে আশার বানী শুনিয়েছেন শোয়েব, “তবুও পাকিস্তান বিশ্বকাপে ফেবারিট। আমি দলকে সমর্থন দেব। কিন্তু পাকিস্তানের অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে হবে। অধিনায়কত্বও আরও ভালো হতে হবে। বিশ্বকাপ জিততে হলে তাদের অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে হবে। তাদের জন্য শুভকামনা রইল।”
শহীদ আফ্রিদির অভিযোগ ব্যাটিং নিয়ে। আফ্রিদি বলেন, “আমাদের ব্যাটিং অর্ডার নির্বাচন আরও ভালো হতে পারত। আপনারা কী মনে করেন? আমার মত হচ্ছে, পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং অর্ডার সাজানোটা একেবারেই ভালো হয়নি।”
এদিকে, পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক এবং বোর্ড প্রেসিডেন্ট রমিজ রাজা নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, “খুবই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচ হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান লাইনের ওপাশে যেতে পারেনি। আসলে ভারতের বিপক্ষে বিশাল ব্যবধানে হারের পর মানসিকভাবে বড় ধাক্কা খেয়েছিল পাকিস্তান, সেটার প্রভাব এই ম্যাচেও পড়েছে। দেখে মনে হচ্ছিল, দলকে বাধ্য করা হয়েছে ধীরেসুস্থে খেলতে। খুব সতর্কতার সঙ্গে খেলছিল, যেন ভুল না হয়। এরপর আউট হয়ে গেলে কি হবে, এমন ভাবনা দলকে পেয়ে বসেছিল।”
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে পাকিস্তানের ফিল্ডিংয়ে কিছু ত্রুটি ছিল। সহজ কিছু সুযোগ মিস করার পাশাপাশি কিছু অতিরিক্ত রানও দিয়েছেন শাদাব-রিজওয়ানরা। সেটাকেও হারের অন্যতম কারণ বলছেন রমিজ, “পাকিস্তানের জন্য এ ম্যাচে বেশ কিছু চাপের মুহূর্ত এসেছিল, যেখানে পাকিস্তান ম্যাচ নিজেদের পক্ষে নিতে পারত। কিন্তু তারা সেটি পারেনি। আসালাঙ্কা শ্রীলঙ্কাকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছে। রিজওয়ান ওর একটি ক্যাচ ছেড়েছে, সহজ ক্যাচই ছিল। সেটি ধরতে পারলে ম্যাচের গতিপথ বদলে যেত। একইভাবে শাদাবের উত্থান-পতন ম্যাচে প্রভাব ফেলছে।”
এছাড়াও দলের ওপেনিং পজিশন এবং অধিনায়কের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রমিজ। রমিজ বলেন, “আমি জানি না ফখর জামানের কাছ থেকে আপনি আর কী পেতে চান। সে যেন আউট হতেই নামে! আউট হওয়ার পর তার শরীরী ভাষা দেখলে বুঝবেন, মনে হচ্ছিল সে আউট হওয়ার জন্য প্রস্তুত। এ রকম খেলোয়াড়কে কেন খেলাচ্ছেন? বাবর আজমের ওপর এখন চাপ আছে। সেটা নেতৃত্বের এবং রান নেওয়ারও। এ ধরনের উইকেটে সে বেশ বাজে খেলছে। আর ম্যাচ হারলে নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।”