লাইভ নয়, বাংলাদেশ–দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ দেখে মনে হয়েছে কোন হাইলাইটস ম্যাচ। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সমানে সমানে ছিল টাইগাররা, সেখানে শেষ ৪০ ওভারে প্রোটিয়া ব্যাটাররা বাংলাদেশের বোলারদের করেছে কচুকাটা। চার-ছয়ের ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে তুলেছে ৩৮২ রান। যেখানে কুইন্টন ডি ককের শতক ও হেনড্রিকস ক্লাসেন ও এইডেন মার্করামের অর্ধশতক রয়েছে। বাংলাদেশকে জিততে হলে করতে হবে ৩৮৩ রান।
আগের দিন (২৩ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান বলেছিলেন আমাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে আমরা টসটা জিতি। কিন্তু দোয়া কাজে আসেনি। ব্যাটিং প্যারাডাইজ উইকেটে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। যে দলটা আগের চার ম্যাচে তিনটাতেই ৩০০+ রান করেছে। যার ভিতর একটাতে ছিল ৪২৮ রানের ইনিংস। একটা ৩৯৯ রান। এমন দলের বিপক্ষে শুরুটা দারুণ এনে দেন শরীফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
সপ্তম ওভারে এসে রেজা হেনড্রিকসকে ফেরান শরীফুল। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ১২ রান। পরের ওভারে মিরাজের জোরের ওপরে করা অফ স্পিনে এলবিডব্লিউ হন তিনে নামা রেসি ফন ডার ডুসেন। ফেরেন ১ রান করে। পাওয়ার প্লেতে তাদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪৪ রান।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসেন প্রোটিয়া ব্যাটাররা। এইডেন মার্করামের সঙ্গে ১৩৭ বলে ১৩১ রানের জুটি গড়েন ডি কক। এরপর এই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ৭ চারে ৬৯ বলে ৬০ রান করে আউট হন মার্করাম।
কিন্তু ডি কক সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন, এরপর আরো ধরা দিয়েছেন বিধ্বংসী রূপেই। এর মধ্যে সাবেক অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে গেছেন তিনি। ৬০১ রান করেছেন তিনি ১০ ইনিংসে, ১২ ইনিংসে স্মিথের রান ছিল ৫৭২।
এবারের বিশ্বকাপে ১০১ বলে নিজের তৃতীয় শতক ছোঁয়া এই ব্যাটার পরের পঞ্চাশ রান করেছেন স্রেফ ২৮ বলে। সাকিবের করা ৪৩তম ওভারে ২২ ও শরিফুলের পরের ওভারে নেন ১৭ রান।
ইনিংস শেষের আগেই অবশ্য তাকে ফেরানো গেছে। হাসান মাহমুদের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়ানো নাসুম আহমেদকে ক্যাচ দেন তিনি। ভাঙে ক্লাসেনের সঙ্গে ১৪২ রানের জুটি। ৭ ছক্কা ও ১৫ চারে ১৪০ বলে ১৭৪ রান করা এই ব্যাটার ড্র্রেসিংরুমে ফেরেন। দারুণ এক ইনিংস খেলে ভেঙেছেন রেকর্ড। উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে এটাই বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে ২০০৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪৯ রান করেছিলেন অজি কিংবদন্তি অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।
ডি কককে ফিরিয়েও অবশ্য কাজ হয়নি তেমন। এরপর তাণ্ডব চালান হাইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার মিলে। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির কাছে থাকা ক্লাসেন শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৪৯ বলে ২ চার ও ৮ ছক্কায় করেন ৯০ রান। এছাড়া মিলার অপরাজিত থাকেন ১৫ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে। বাংলাদেশের হয়ে হাসান দুটি উইকেট শিকার করেছেন। সাকিব, মিরাজ ও শরিফুল ঝুলিতে পুড়েন একটি করে উইকেট।