ভারতের উত্তর প্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস) মানবপাচারকারী চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক।
জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা বাংলাদেশি লোকজনকে ভারতে পাচারের পর ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়ে সেখান থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে দিতো।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) উত্তর প্রদেশ এটিএসের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত রোববার দুপুরের দিকে এটিএসের কর্মকর্তারা কানুপর থেকে ওই ৯ বাংলাদেশিকে আটক করে। পরে সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এটিএসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদবিরোধী পুলিশের একটি দল ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী ৯ বাংলাদেশিকে রোববার আটক করে। এ সময় কানপুর থেকে ট্রেনযোগে দিল্লিতে পৌঁছানোর পর অন্য কোনো দেশে যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল তাদের। পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই চক্রের মূলহোতা আরেক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এছাড়া ভুয়া ভারতীয় নথিপত্র তৈরি করে এই চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার করতেন বলে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। এই তথ্যের ভিত্তিতেই এটিএস অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকারী আট বাংলাদেশি নাগরিককে শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিরা হলেন- আসিদুল ইসলাম, হুসাইন মোহাম্মদ, আলামিন আহমেদ, জাইবুল ইসলাম, জামিল আহমেদ, রাজীব হুসাইন, সাখাওয়াত খান এবং আলাদ্দিন তারেক। তবে গ্রেপ্তারদের সবার বয়স ২০ এর কোঠায় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের একটি পরিত্যক্ত মাদ্রাসায় তাদের হিন্দিতে কথা বলা ও স্বাক্ষরের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল ট্রেনযোগে দিল্লিতে নেওয়ার আগে এই বাংলাদেশিদের ভারতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। যেখানে তাদের হিন্দু নাম লেখা ছিল।
এটিএসের কর্মকর্তারা বলেছেন, “গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাচারকারী চক্রের মূলহোতা হিসেবে মাহফুজুর রহমানের নাম বলেছেন। তিনি এক লাখ রুপির বিনিময়ে প্রত্যেককে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করতেন। এই বাংলাদেশিদের জন্য মাহফুজুর রহমান ভারতীয় ভুয়া পাসপোর্ট ও নথিপত্র তৈরি করতেন। একই সঙ্গে ভারতে পাচার বাংলাদেশিদের দুবাইয়ে কাজের জন্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।”
এ সময় বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে পাওয়া গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার কলকাতার ২৪ পরগনার একটি মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে মাহফুজুর রহমানকে (৩৪) গ্রেপ্তার করে এটিএস। বাংলাদেশি নাগরিক মাহফুজুর রহমানও ভুয়া ভারতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে দেশটিতে বসবাস করে আসছিলেন।
তাকে সাময়িক রিমান্ডে নেওয়ার জন্য লখনৌতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এটিএস কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে দেশটির উত্তর প্রদেশে অভিযুক্ত ৯ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার দায়ে এফআইআর দায়ের করেছে এটিএস। একই সঙ্গে এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে তারা।