• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ কখন, কীভাবে পড়তে হয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ কখন, কীভাবে পড়তে হয়
ছবি : সংগৃহীত

প্রচণ্ড দাবদাহে মানুষ, পশুপাখি, বৃক্ষ ও তরুলতা—সবকিছুই হাঁপিয়ে উঠেছে। এক চিলতে বৃষ্টির জন্য সর্বত্রই তীব্র হাহাকার বিরাজ করছে। খরতাপে শুকিয়ে গেছে বেশির ভাগ খাল ও পুকুরের পানি। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। 
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই এখন তীব্র গরম। আকাশে মেঘ নেই, পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতা কমে গেছে। এতে আরও বাড়ছে গরমের তীব্রতা। জরুরি প্রয়োজনে যারা বাইরে বের হচ্ছেন, তারা পড়ছেন বেশ অস্বস্তিতে। রোদ ও গরমের তীব্রতার সঙ্গে বাড়ছে মানুষের বিভিন্ন রোগ এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য রোদ, বৃষ্টির প্রয়োজন অনস্বীকার্য। কিন্তু অনেক দিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে যাচ্ছে কোথাও কোথাও।

ইসতিসকার নামাজ কখন পড়বে
বৃষ্টি না হওয়ায় তাপপ্রবাহে দেশের মানুষের বিপদ-আপদ ও দুঃখ-কষ্ট হতে থাকলে প্রয়োজন পূরণের জন্য আল্লাহর দরবারে নামাজ পড়ে পানি প্রার্থনা করে দোয়া করা সুন্নত। বৃষ্টির যিনি মালিক তার কাছেই ধরণা দিতে, তার কাছেই বৃষ্টি প্রার্থনা করতে বলে ইসলাম। একেই আরবিতে বলা হয় ‘ইসতিসকা’ অর্থাৎ পানি প্রার্থনা করা। বৃষ্টি তো তারই রহমত ও মহান কুদরতের প্রকাশ।

আল্লাহ চাইলে বৃষ্টি দেন, আবার চাইলে অনাবৃষ্টিতে ভোগান। তাই অনাবৃষ্টির এমন সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে বৃষ্টিদাতার দিকেই ফিরে আসা প্রকৃত জ্ঞানীর কাজ।

আল্লাহতায়ালা বলেন, “তিনিই আল্লাহ, যিনি বায়ু প্রেরণ করেন। অতঃপর তা (বায়ু) মেঘমালাকে সঞ্চালিত করে। অতঃপর তিনি মেঘমালাকে যেভাবে ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তাকে (মেঘমালাকে) স্তরে স্তরে রাখেন। এর পর তুমি দেখতে পাও যে, তার মধ্য হতে বৃষ্টিধারা নির্গত হয়। তিনি তার বান্দাদের মধ্যে যাদের ইচ্ছা তা (বৃষ্টি) পৌঁছান; তখন তারা আনন্দিত হয়।’ (সুরা রুম: ৩৮)

ইসতিসকার নামাজের পদ্ধতি

ইসতিসকার নামাজ পড়া মুস্তাহাব। তা আদায়ের পদ্ধতি হলো— ইমাম একটি দিন নির্ধারণ করবেন। সেই দিন তিনি সব লোককে নিয়ে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে খোলা প্রান্তে যাবেন। সেখানে আজান ইকামাত ছাড়া দুই রাকাত নামাজ পড়বেন। নামাজে উচ্চস্বরে কিরাত পাঠ করবেন। নামাজের পরে খুতবা দেবেন এবং খুতবার শুরুতে চাদর ঘুরিয়ে দেবেন, তার পর কেবলার দিকে দাঁড়িয়ে দুহাত তুলে দোয়া করবেন।, সবাই বসে বসে আমিন বলবেন।

টানা তিন দিন ইসতিসকার জন্য বের হওয়া মুস্তাহাব। (দারুল উলুম দেওবন্দের মুস্তাফাদ ফাতাবি

ইসতিসকার দোয়া

আয়েশা (রা.) বলেন, ‘লোকজন রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে অনাবৃষ্টির কষ্টের কথা নিবেদন করলে রাসুলুল্লাহ (স.) ঈদগাহে সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে নিচের দোয়া করেন। অতঃপর আল্লাহর হুকুমে বৃষ্টি বর্ষণ হতে শুরু করে। বৃষ্টি থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষের ছোটাছুটি দেখে নবীজি হেসে ফেলেন।’ (আবু দাউদ: ১১৭৩)

দোয়াটি হলো

আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আর-রাহমানির রাহিম। মালিকি ইয়াউমিদ্দিন। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইয়াফয়ালু মা ইউরিদ। আল্লাহুম্মা আনতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল গানিয়্যু ওয়া নাহলুল ফুকারাউ। আনজিল আলাইনাল গাইছা ওয়াজয়া‍‍`ল মা আনজালতা লানা কুওয়্যাতান ওয়া বালাগান ইলা হীন।’

অর্থ: ‘সব প্রশংসা পৃথিবীর প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তিনি পরম করুণাময় এবং দয়ালু ও শেষ বিচারের মালিক। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, তিনি যা ইচ্ছা করেন, তা-ই করেন। হে আল্লাহ! তুমিই একমাত্র মাবুদ, তুমি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই। তুমি ধনী, আমরা গরিব। আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করো এবং আমাদের জন্য যা অবতীর্ণ করো, তা আমাদের জন্য শক্তিময় ও কল্যাণ দান করো।’ (আবু দাউদ: ১১৭৩)

Link copied!