বিএনপির সঙ্গে নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মসূচির ঘোষণার কোনো তফাত নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, “দুই দিন বিরতি দিয়ে বিএনপি ও তাদের জোটের দলগুলো অবরোধ ডেকেছে। আগে কর্মসূচি ঘোষণা দিতে সংবাদ সম্মেলন করা হতো। বিভিন্ন দেশে যেসব নিষিদ্ধ সংগঠন থাকে, তারা যে রকম কর্মসূচি ঘোষণা করে, সেই আদলে অর্থাৎ তালেবানি কায়দায় কর্মসূচি ঘোষণা করা শুরু করেছে বিএনপি।”
রোববার (৫ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেছেন।
বিএনপি নেতাকর্মীদের সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, “আফগানিস্তানে তালেবান যখন ক্ষমতায় ছিল না, তখন তারা যেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করত কিংবা ইসলামিক স্টেট যেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করে, ঠিক একই কায়দায় অনলাইনে তারা এখন কর্মসূচি ঘোষণা শুরু করেছে। তাদের কর্মসূচি বলতে কার্যত অবরোধের নামে মানুষের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগ করা। আমরা বহু বছর বিরোধী দলে ছিলাম, কলেজে ছাত্রলীগের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি, ১৬ বছর বয়স থেকে। আমরা পিকেটিং করতাম, রাস্তায় বড়জোর রিকশার পাম্প ছেড়ে দিতাম, মানুষকে বোঝাতাম, মিছিল করতাম এর বেশি কিছু না। তা-ও পুলিশের লাঠিপেটা খেতাম।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি-জামায়াত একটি শব্দও বলেনি। কারণ ইসরায়েলি বাহিনীর অনুকরণে তারা মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে। বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী দলে রূপান্তরিত হয়েছে। তারা রাজনৈতিক দল নয়। আমরা এই সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে আইনে আওতায় আনতে বদ্ধপরিকর। তারা ভেবেছে, একের পর এক অবরোধ ডেকে দেশকে অস্থিতিশীল করবে। তারা দেখতে পাবে, জনগণ তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে, জনগণই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, সরকারের কিছু করতে হবে না। আমরা জনগণের সঙ্গে থাকব।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “অবরোধের নামে মানুষের সম্পদে হামলা চালাচ্ছে বিএনপি। রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারেন, কিন্তু বিএনপি সেটা করছে না। ইসরায়েলি বাহিনীর হাত থেকে যেমন হাসপাতাল, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স রেহাই পাচ্ছে না, বিএনপির হাত থেকে কোনো কিছুই রেহাই পাচ্ছে না। শিক্ষার্থী বহনকারী বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। যেমন ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় করছে। গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নির্মমতা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত একটি কথাও বলেনি।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “সারা দুনিয়াতে প্রতিবাদ হচ্ছে, হাজার হাজার মানুষের প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। লন্ডনে লাখো মানুষের সমাবেশ হচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলোতে সরকারের নির্দেশ অমান্য করে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমাবেশ হচ্ছে। অর্থাৎ বর্বরতার বিপক্ষে সমাবেশ হচ্ছে।”
দেশে-বিদেশে বসে গুজব রটানোকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাছান মাহমুদ বলেন, “তারা (বিএনপি) নানা ধরনের গুজবও রটাচ্ছে। যারা গুজব রটাচ্ছে, তাদেরও শনাক্ত করার কাজ চলছে। কেউ কেউ ভেবেছে, বিদেশে বসে গুজব রটিয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে, যেখান থেকে বসে গুজব রটানো হচ্ছে, আমরা সেই দেশে বসে সেখানকার আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”