সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা একের পর এক অবরোধের কারণে জনজীবনে অস্বস্তি শুরু হয়েছে। সড়কে পর্যাপ্ত গাড়ি না থাকায় বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিসগামী যাত্রীরাও পড়েছেন বিপদে। ঘন ঘন বাসে জ্বালাও-পোড়াও থেকে বাঁচতে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে ‘স্বস্তির বাহন’ হিসেবে মেট্রোরেলকে বেছে নিয়েছেন রাজধানীবাসী।
সরেজমিনে রাজধানীর ফার্মগেট মেট্রোরেলের স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারে ভিড় করেছেন যাত্রীরা।
কাউন্টারের সামনে বেশ তাড়াহুড়ো করতে দেখা যায় বেসরকারি চাকরিজীবী আবুল হোসেনকে। এ সময় তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “স্টেশনে আসতে আজকে একটু দেরি হয়েছে। অফিস প্রবেশের সময় খুব কম। তাই টিকিট নিয়ে দ্রুত মেট্রোরেলে করে অফিসে যেতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “মেট্রোরেল আমাদের মতো অফিসগামী যাত্রীদের জন্য আশীর্বাদ। সড়কে মতিঝিল যেতে যেখানে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগত, সেখানে মেট্রোরেলে আমি ১০ মিনিটেই যেতে পারছি। বাকি সময় বেঁচে গেল। যেটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
ফার্মগেট মেট্রোস্টেশন থেকে মতিঝিল যাওয়ার পথে মেট্রোরেলের ভেতরে সাধারণ যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। যাত্রীদের অবস্থা এমন যে তিল ধারণের ঠাঁই নেই।
মেট্রোকোচে দরজার পাশে হাতল ধরে কোনোমতো দাঁড়িয়েছিলেন কাউসার নামের এক যুবক। উত্তরা থেকে মতিঝিল গন্তব্য তার। কাউসারের সঙ্গে কথা হলে তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “উত্তরা থেকে মিতিঝিল যাব একটা কাজে। উত্তরা স্টেশন থেকেই যাত্রীদের চাপে ভেতরে সিট পাইনি। আজকে যাত্রী এত বেশি যে মাঝখানে ভালোভাবে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা নেই।”
কাউসার আরও বলেন, “একদিকে বাইরে হরতাল-অবরোধ চলছে, অন্যদিকে মেট্রোরেলে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে। সড়কপথে গাড়ি ভাঙচুর, আগুন দেওয়া, মারামারি, এসব কিছু থেকে বাঁচতে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করা নিরাপদ বলে আমি মনে করি।”
শাহিন নামের আরেক যাত্রী বলেন, “মেট্রোরেল আমাদের জন্য খুবই ভালো। হরতাল-অবরোধে বাস নেই সড়কে। আবার একটা বাস এলেও যাত্রী বেশির কারণে জায়গা পাওয়া যায় না। যানজট তো আছেই।”
শাহিন আরও বলেন, “মেট্রোরেলে টাকা বেশি গেলেও ভ্রমণ করে মজা আছে। এসি আছে, সময় কম লাগছে। যানজট নেই। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের জন্য মেট্রোরেল খুবই ভালো।”
এর আগে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চললেও রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়েছে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত। অবরোধে বাসে বা সড়কপথে যাতায়াতের ঝুঁকি থাকলেও মেট্রোরেলে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তাই এ অবরোধে রাজধানীবাসীর ‘স্বস্তির বাহন’ হয়ে উঠেছে মেট্রোরেল।
আপনার মতামত লিখুন :