• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫

টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর সড়কের খানাখন্দ, দীর্ঘ যানজট


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৩, ১০:০১ পিএম
টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর সড়কের খানাখন্দ, দীর্ঘ যানজট

টানা বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় সড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। মূল সড়ক থেকে অলিগলি সর্বত্রই একই হাল। বেশির ভাগ সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে বছরজুড়ে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি ও উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা। খানাখন্দে চলাচল করে নষ্ট হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রপাতি।

গত কয়েকদিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আর এ বৃষ্টির কারণে সড়কগুলোতে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।

মতিঝিল, আরামবাগ, মালিবাগ, মৌচাক, রামপুরা, মুগদা ও যাত্রাবাড়ি, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার বেশির ভাগ সড়কেই গর্ত তৈরি হয়েছে। বিশেষ যেসব এলাকায় মেট্রোরেল ও উড়াল সড়কের কাজ চলছে, এসব এলাকায় সড়কের অবস্থা বেশি খারাপ।

সামান্য বৃষ্টি হলেই মুগদা ৫০০ শয্যার হাসপাতালের সামনে হাঁটুপানি জমে যাচ্ছে। কয়েকটি স্থানে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। কিন্তু মেরামতে কর্তৃপক্ষের নজর নেই। বরং সড়কের একটি ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকায় সেখানে গাড়িচালকদের সতর্ক করতে প্রায় এক মাস ধরে বাঁশ দিয়ে রাখা হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে অনেক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। এ কারণে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করছে ওই সড়ক দিয়ে।

হাসপাতালে আসা আজগর হোসেন নামে একজন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “মুগদার ভেতরের প্রতিটি সড়ক থেকে অলিগলি চলাচলের অনুপযোগী। কোথাও ম্যানহোল খোলা, আবার কোথাও ম্যানহোল উঁচু-নিচু করে বসানো। এছাড়া ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তো আছেই।”

মতিঝিল এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “কমলাপুর মোড় থেকে গোলাপবাগ এলাকায় মেট্রোরেলের কাজ চলায় অসংখ্য খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। বাস, রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা যা দিয়েই চলাফেরা করি না কেন, সবই গর্তে পড়ে যায়। ফলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার অশঙ্কা থাকে। আর সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা আর পানি মিলে একাকার হয়ে যায়। এতে বোঝার উপায় থাকে না কোথায় খানাখন্দ, কোথায় সমতল।”

শাহবাগ এলাকায় পথচারী সৌরভ হোসেন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “মেট্রোরেলের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে এই রোডের অবস্থা খারাপ। বৃষ্টির পর অবস্থা আরও হয়ে পড়ে। এখন রাস্তা দিয়ে চলাচল করাই মুশকিল। বৃষ্টির পর গর্তে পানি জমে থাকায় রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও গাড়ির চাকার পানি ছুটে শরীরে লাগে।”

ফার্মগেট এলাকার বাসিন্দা আবু কায়সার সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ফ্লাইওভারের কাজ চলছে দুই বছর ধরে। কিন্তু পথচারীদের জন্য বিকল্প রাস্তা নেই। হাঁটার জন্য বিকল্প রাস্তা না হোক, অন্তত কাদা ও বড় বড় গর্তের দুর্ভোগ থেকেও যদি মুক্তি পেতাম, তাহলে কষ্ট অনেক কমে যেত।”

কারওয়ান বাজার এলাকায় আয়াত পরিবহনের এক বাসচালক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ঢাকার বিভিন্ন রুটের যানবাহন চলাচল করে শাহবাগ হয়ে। কিন্তু সড়কটিতে এখন যান চালানোর পরিবেশ নেই। ড্রাইভিং পেশায় আছি বলে বাধ্য হয়ে খানাখন্দ পেরিয়ে বাস চালাই চরম ঝুঁকি নিয়ে।”

সড়কের বেহাল দশার বিষয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এ বছর বৃষ্টি আগে থেকেই শুরু হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় বৃষ্টি বেশিও হয়েছে। তাই রাস্তার অবস্থা খারাপ। আমাদের এক হাজার কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ রাস্তা ভেঙেছে বলে ধারণা করছি।”

আসাদুজ্জামান আরও বলেন, “বেশ কয়েকটি সড়কের ওপর দিয়ে মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। চাইলেও সেখানে মেরামতের কাজ করতে পারছি না। প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সবাইকে একটু কষ্ট করতে হবে। তারা আমাদের সড়ক বুঝিয়ে দিলে আমরা দ্রুত সংস্কার করে ফেলব।” 

Link copied!