প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “২০০১ সালের নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেও ক্ষমতায় যেতে পারিনি। সে নির্বাচনে খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছিল। আমাকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তখন আমি বলেছিলাম, আমি শেখ মুজিবের মেয়ে। ক্ষমতার লোভ করি না, জনগণের স্বপ্ন বেচি না।”
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে কাওলায় আয়োজিত জনসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া পাকিস্তানের ধারাবাহিকতা নিয়ে চলতে চেয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতার হত্যাকারীকে ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে বসিয়েছিল। আর আল-বদর, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, যারা এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, মা-বোনকে ধরে নিয়ে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে দিয়েছে, তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল। জিয়াও বসিয়েছিল, এরশাদও, খালেদা জিয়াও। কাজেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে এদের কোনো অবদান নেই।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৭৫ এর পর ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল– জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ খালেদা জিয়া থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, এই ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা দেশের জন্য কি করেছে? মানুষের জন্য কি করেছে? মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কি করেছে? সেটা একবার চিন্তা করে দেখবেন। অনেকে বড় বড় কথা বলেছে, দেশের মানুষের জন্য তারা কি করেছে?”
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি, বিদ্যুৎ ছিল মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট। এই বিদ্যুতের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে সে কানসাটে মানুষকে গুলিকে হত্যা করে। ঢাকা শহরে পানির অভাব, বিদ্যুতের অভাব ছিল। মানুষ বিদ্যুৎ ও পানির জন্য আন্দোলন করেছিল। বিএনপির এক নেতাকে পাবলিক ধাওয়া দিয়েছিল, নামই হয়ে গিয়েছিল দৌড় সালাউদ্দিন। পাবলিকের ধাওয়া খেয়ে সে পালিয়েছিল। খালেদা জিয়া চাহিদা পূরণ করতে পারেনি।”
আওয়ামী লীগের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে একটা দেশের যে উন্নতি হয়, যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে তারা ক্ষমতা থাকলে যে দেশের জন্য উন্নতি হয়, আজ আমরা সেটা প্রমাণ করেছি।”
এর আগে কাওলা মাঠে দুপুর থেকেই জনসভায় নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের উদ্বোধনের দিন এ সমাবেশ করার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তারিখ পরিবর্তন করা হয়।
এই সমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে হাজির হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই জনসভাস্থল নেতাকর্মীতে ভরে যায়। সমাবেশ মঞ্চে পৌঁছলে নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে স্লোগানে স্লোগানে স্বাগত জানান।