• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

‘লোডশেডিংয়ে ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৩, ০৫:৩৬ পিএম
‘লোডশেডিংয়ে ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে’

গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহের মধ্যে দেশজুড়ে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। মধ্যরাতেও লোডশেডিংয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন মানুষ। অনেকেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। রাজধানীতে গড়ে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা করে হচ্ছে লোডশেডিং। লোডশেডিংয়ের কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

ইদ্রিস মিয়া নামের এক রিকশাচালক বলেন, “রাতে লোডশেডিংয়ের কারণে ঘুমানো যায় না। আমরা তো সারাদিন বাইরে রিকশা চালাই। দিন শেষে বাড়ি ফিরে একটু ঘুমাতে পারি না। আবার দিনেও বিদ্যুৎ থাকে না।”

রায়হান নামের এক মোটরসাইকেল চালক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এ রোদে মোটরসাইকেল চালাতে কষ্ট হয়। তার ওপর দীর্ঘক্ষণ জ্যামে বসে থাকতে হয়। কিন্তু জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনই বের হতে হয়। এতেও তেমন লাভ হচ্ছে না। গরমের কারণে রাস্তায় তেমন যাত্রী বের হয় না। সারাদিন পরিশ্রম শেষে বাসায় ফিরলে লোডশেডিং দেখলে আর ভালো লাগে না।”

এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতে কাজের ব্যাঘাত ঘটছে। উৎপাদন কমেছে বিভিন্ন কারখানায়।

লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিক মতো কাজ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন মগবাজারের একটি কম্পিউটার দোকানের পরিচালক জহির রহমান। তিনি বলেন, “বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কিন্তু লাগামহীন লোডশেডিংয়ের কারণে সময় মতো প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা যাচ্ছে না। অনেক চাকরি প্রত্যাশীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন ঠিক মতো আবেদন করতে পারছেন না। এভাবে চলতে থাকলে তো দোকান ভাড়াই উঠবে ন।”

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল করিম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম সামনে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এই সপ্তাহে বিক্রি বাড়বে। কিন্তু একদিকে লোডশেডিং, অন্যদিকে তীব্র গরমের কারণে ক্রেতারা বাসা থেকেই বের হন না।”

বেসরকারি চাকরিজীবী হুমাইরা বেগম বলেন, “লোডশেডিংয়ে ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাসায় কারেন্ট চলে গেলে বাসার ছাদে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়।”

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৫ জুন) সারা দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৯০৫ মেগাওয়াট। মোট লোডশেডিং করা হয়েছে ২ হাজার ৩৯৫ মেগাওয়াট। যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লোডশেডিংয়ের পরিমাণ এর চেয়ে অনেক বেশি।

অপরদিকে রাজধানীতে ডিপিডিসির বিতরণ অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ২ হাজার মেগাওয়াট। সরবরাহ করা হয়েছে ১ হাজার ৬৭০ মেগাওয়াট, লোডশেডিং করা হয়েছে ৩৩০ মেগাওয়াট।

এদিকে কয়লা সংকটের কারণে সোমবার পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদনও বন্ধ হয়েছে। এর ফলে লোডশেডিং আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। পাশাপাশি জ্বালানি তেলচালিত সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রেগুলোতে জ্বালানি সংকটে উৎপাদন ও কমছে দিন দিন।

Link copied!