রাজধানীর চালের বাজারে অন্যান্য চালের দাম স্থিতিশীল থাকলেও আতপ চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। যদিও এই চালের ক্রেতারা সৌখিন প্রকৃতির। দাম বেড়ে যাওয়ায় তারাও পড়েছেন বিপাকে।
রোববার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে দেখা যায়- আতপ চালের কেজি খুচরা ও পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগে এই চাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।
অপরদিকে, স্থিতিশীল সিদ্ধচালের বাজারে ‘গুটি স্বর্ণা’ চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৪৭ টাকা। একইভাবে প্রতি কেজি ‘নাজির শাইল’ ৬৩ থেকে ৬৪ টাকা, ‘পায়জাম’ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, ‘আটাশ’ ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা এবং ‘উনত্রিশ’ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৩ থেকে ৫৪ টাকা।
বিক্রেতাদের দাবি, স্থিতিশীল চালের বাজারে আতপ চালের দাম বেড়ে যাওয়ার জন্য দায়ী মিল মালিকরা।
আলাউদ্দীন নামে এক চাল ক্রেতার সঙ্গে কথা হয় কিচেন মার্কেটে। তিনি বলেন, “আতপ চাল হচ্ছে শখের খাবার। বাড়িতে পোলাও কিংবা পিঠা প্রস্তুতের আগে আতপ চাল কিনতে হয়। বাজারে এসে সব জিনিসের দাম বেশি শুনতে হয়। শখের আতপ চালের দামও আর থেমে নেই। সিদ্ধ চালের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও আতপের দাম বেড়েছে। বস্তা হিসাবে কেনার সামর্থ্য নেই। ১ কেজি অথবা ২ কেজির প্যাকেট কিনতাম। দাম বেড়ে যাওয়ায় ১ কেজির প্যাকেটও কিনতে মন চায় না। কারণ চাল কেনার আগে এখন তেলের হিসাব করতে হয়। শখের তোলা এখন আশি টাকা না, একশ ছাড়িয়েছে।”
রাইহান ইসলাম নামে এক চাল ক্রেতা বলেন, “অস্থিরতার বাজারে সিদ্ধ চালের দাম একই রকম আছে। কিন্তু দাম আরও কম হওয়া প্রয়োজন। ৪০ টাকা কেজি চাল বিক্রি হলে সবার সুবিধা হবে। আতপ চালের বাজার বেড়ে গেছে। যাদের আয় রোজগার কম, তারা তো পোলাও খেতে পারতো না। আতপের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন সৌখিন মানুষও কিনে খেতে চায় না। বর্তমান বাজারে চাল কিনতে গেলে নুনের দাম নিয়ে ভাবতে হয়।”
শাহজাহান নামে এক চাল বিক্রেতার কাছে আতপ চালের মূল্য বৃদ্ধির কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আগে এক কেজি আতপ চাল বিক্রি করছি ১৩০ টাকা। আর ভালো মানের আতপ চালের বাজার ছিল ১৩৫ টাকা। গত এক সপ্তাহ ধরে আতপ চাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। এখন প্রতি কেজি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সিদ্ধ চালের দাম একই রকম আছে। মাসের শেষে ক্রেতা কম। দাম বাড়ায় আতপ চাল যে টুকু বিক্রি হচ্ছিল, তার পরিমাণও কমে এসেছে।”
জসিম উদ্দীন নামের এক চাল ব্যবসায়ী বলেন, “শুনেছি সরকার আতপ চাল বাইরে রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে। এরপর থেকে পোলাও চালের (আতপ) দাম বেড়েছে। বাজারে এই চালের চাহিদা তেমন নেই। মনে হয়, রপ্তানির খবরের পর থেকে মিলাররাই চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।”