• ঢাকা
  • শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২, ৩০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ভূমিকম্পে আহতদের করুণ দিনযাপন: নিটোর ও ঢামেকে ঠাঁই ফ্লোরেই


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৫, ০৩:৪০ পিএম
ভূমিকম্পে আহতদের করুণ দিনযাপন: নিটোর ও ঢামেকে ঠাঁই ফ্লোরেই

রাজধানী ও আশপাশে ভূমিকম্পের আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই হাসপাতালগুলোতে ভিড় জমছে আহত রোগীদের। আগারগাঁওয়ের জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (নিটোর) এখন যেন আহত মানুষের আর্তনাদের আরেক কেন্দ্র। সেখানে ফ্লোরে শুয়ে যন্ত্রণার সঙ্গে লড়ছেন নির্মাণশ্রমিক থেকে শুরু করে চটপটি বিক্রেতা—সবাই।

৬ তলা থেকে নিচে পড়ে দুই পা ভাঙলেন শ্রমিক ধলাই

জুরাইন টাওয়ারের নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করতে গিয়ে প্রাণে বাঁচলেও ভয়াবহভাবে আহত হন রাজমিস্ত্রি ধলাই। ফ্লোরে দুই পা প্লাস্টার করা অবস্থায় শুয়ে তার অভিজ্ঞতার কথা জানালেন তিনি।

ধলাই বলেন, “৬ তলার সিঁড়ির সামনে কাজ করছিলাম, এমন সময় বিল্ডিংটা দুলতে থাকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমি ছিটকে ৫ তলার সিঁড়িতে গিয়ে পড়ি। তারপর আর দাঁড়াতে পারিনি।”

প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলেও পরে তাকে পাঠানো হয় নিটোরে।

তিনি আরও বলেন, “এক পা বেশি ভেঙেছে, অন্যটা খানিকটা। গরিব মানুষ—সংসারের কথা ভেবে বুকটা কেঁপে যাচ্ছে। বিছানাও পাইনি, ফ্লোরেই পড়ে আছি।”

ধলাই জুরাইন রেলগেট এলাকার খন্দকার গেটে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকেন।

চা খেতে গিয়ে আহত চটপটি বিক্রেতা সুবহান

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আসা সুবহানের গল্পটাও কম নাটকীয় নয়। চটপটি বিক্রি করেন তিনি। সকালে দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন, হঠাৎই ভূমিকম্পের আচমকা ঝাঁকুনি।

সুবহান বলেন, “সবাই ছুটে পালাচ্ছিল। আমিও দৌড় দেই। তখনই একজনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যাই। এরপর বাম পায়ে ভর দিতে পারিনি।”

নিটোরে এক্সরে করে জানা যায়—তার বাম হাঁটুর বাটি ভেঙেছে। তিনিও ফ্লোরেই শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

নিটোরে আহত ১১৯, ভর্তি ২৩

ভূমিকম্পের পরদিন হাসপাতালে চিত্রটা কেমন ছিল—জানালেন পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কেনান।

তিনি বলেন, “মোট ১১৯ জন আহত অবস্থায় এসেছেন। ভর্তি রাখা হয়েছে ২৩ জনকে। এদের বেশিরভাগই আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি, লাফিয়ে নামা, জানালা-রেলিং ধরে ঝুলে থাকা বা মাথার ওপর কিছু পড়ার কারণে আহত হয়েছেন।”

আহতদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ১ শিশু রয়েছে বলে জানান তিনি। রোগীদের জন্য আলাদা টেককেয়ারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

ঢামেকে ৫০ জন চিকিৎসা নেন, প্রাণ গেল বাবা-ছেলের

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও দিনভর আহতদের ভিড় ছিল। পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ ফারুক জানান, ভূমিকম্পের ঘটনায় মোট ৫০ জন চিকিৎসা নেন।

তার মধ্যে নরসিংদী থেকে আসা বাবা উজ্জ্বল ও ছেলে ওমর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বর্তমানে ৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সূত্র: ঢাকাপোস্ট

Link copied!